Sedin Choitro Mash - Session 1
Episode - 2
A College Love Story
Sedin Choitro Mash
Episode 2
কলেজের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে কলি ওর বন্ধুর জন্য অপেক্ষা করছিল,,,, এই মেয়েটা কখন আসবেএই মেয়েটা কখন আসবে? এত দেরি হয়ে গেল প্রথম ক্লাসটা মনে হয় আজকে আর করা হবে না।। এইগুলো ভাবতে ভাবতেই তার কাঁধেতে একটা হাতের স্পর্শ অনুভব হলো পিছনে ফিরে সে তাকিয়ে দেখল তার বন্ধু মিলি এসে তার দিকে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে,,,
কলি বলল-- এত দেরি কেন করলি রে? দেখতে পাচ্ছিস তো যে ক্লাস আর শুরু হতে মাত্র ১০ মিনিট বাকি,,, তোর জন্য মনে হচ্ছে আজকে ক্লাসটার পড়াই হবে না।।
মিলি বললো-- আরে আমার কথা ডার্লিং এত ভাবিস কেন তুই জাস্ট চিল মার,,, কিচ্ছু দেরি হবে না আমরা ঠিক সময় ক্লাসে এন্ট্রি নেব।।
- কথা-- সেই এখন না বুকে তাড়াতাড়ি চল ক্লাসে পৌঁছাই আজকে আবার এক্সাম নেবে,,,, এই শোন তুই আজকে ঠিকমতো পড়ে এসেছিস তো? আমি কিন্তু দেখাবো না এই বলে রাখছি।।।
- মিলি বললো--- এরকম কেউ করে? তুই না আমার লক্ষী বন্ধু,,,, আমার সোনা আমি আমাকে একটুখানি দেখার তাহলেই হয়ে যাবে।।
- কথা ওরম কথা শুনে মাথায় হাত চামড়ালোমাথায় হাত চাপড়ালো, নটাংকি করা বন্ধ কর আর তাড়াতাড়ি চলকরা বন্ধ কর আর তাড়াতাড়ি চল তুই খুব ভালো করে জানিস আমি যতই বলি তোকে ঠিক আমি দেখাবোই। চল চল ক্লাসে চল।। বলে তারা এগোতে লাগল।।
গেট থেকে কিছুদূর এগোনোর পর তাদের পেছনে একটা গাড়ির হর্ন ক্রমাগত শুনতে পাচ্ছিল,,,, ধুর বাবা কে রে? এতবার হন মারার কি আছে পাশে তো জায়গা খালি আছে যা না বাবা ওইদিকে মিলি খানিকটা রেগেই বললো।।।
পিছন ফিরে সে দেখলো একটা ব্ল্যাক বিএমডব্লিউ তাদের পেছনে ক্রমাগত হন মেরে যাচ্ছে,,, মিলি গাড়িটা সামনে এসে দাঁড়িয়ে উইন্ডোর সামনে ঠক ঠক করলো,,, এই যে মিস্টার চোখে কি আপনি অন্ধ পাশে এত জায়গা খালি আছে আমি সাইড কাটিয়ে বেরিয়ে যান না তানা আমাদের পেছনে হর্ন দিয়ে যাচ্ছেন সমানে।।
ড্রাইভার গাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে বললো,,, ম্যাডাম এটা গল্প করার জায়গা না এটা কলেজ ,,, আপনারা যদি কচ্ছপের গতিতে গল্প করতে করতে যান তাহলে অন্যদের ডিসটার্ব হচ্ছে যে।।।
কথাটা শুনেই মিলির মাথা গেল প্রচন্ড গরম হয়,,, সে আঙুল তুলে ড্রাইভারকে বলল শুনুন আমি খুব ভালো করে জানি এটা কলেজ আর আপনিও সেটা মেনে চলুন ও দেখে চলুন।। আমি জানি এখানে পড়তে আসে গল্প করতে নয় আর আপনিও এখানে নিশ্চয়ই গল্প করতে আসেননি,,, তাই আমাকে জ্ঞান না দিয়ে দয়া করে আপনি পাশ দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারেন,,,,,,,
আগের পর্ব পড়তে ক্লিক করুন
পর্ব ১
ওদের দুজনের এই ঝগড়াগুলো আরও দুজন দেখছিলো,,,মিলির পাশে দাঁড়িয়ে কথা ও গাড়ির ভিতর বসা ঈশান চ্যাটার্জী।।
মিলির হাত ধরে ওকে টেনে একদিকে নিয়ে আসে কথা,,,এই তুই কি রে একে তো দেরি হয়ে গেছে তোর জন্য তারপর তুই এখন ঝগড়া করতে লেগেছিস।।
মিলি কথাকে আরও কিছু বলতে যাচ্ছিলো কিন্তু কথা ওকে থামিয়ে সামনের ড্রাইভারকে বললো --
দাদা আমাদের ভুল হয়েছে আপনি প্লিজ ওর কথায় কিছু মনে করবেননা,,,আমরা সরে যাচ্ছি আপনি প্লিজ এগিয়ে যান।।
কথার কথাগুলো শুনে ড্রাইভার আর ঈশানের আশ্চর্য্য লাগলো,,,
ড্রাইভার -- বাহ মেয়েটা কত ভালো করে বললো আর দেখতেও খুব মিষ্টি কিন্তু ওর বন্ধুটি দেখো যেন নিমপাতার ঝোল,,,মুখে না আছে মিষ্টতা আর না আছে কথার মাধুর্য্য।।।
ইশান-- রোহান গাড়িতে উঠে আয় আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে,,,,ভিতর থেকে ঈশানের গলার আওয়াজ পাওয়া গেল।।
কথা সেই গলার আওয়াজ শুনে একবার তাকালো গাড়ির ভিতরে কিন্তু কালো কাঁচ দেওয়ার জন্য ভিতরে কিছু দেখতে পেলনা।।।
কিন্তু কথার তাকানতে আর একজনের মুগ্ধতা কিন্তু প্রকাশ পেল তার ঠোঁটের হাসিতে।।
ঈশান --মেয়েটির যেমন সুন্দর কথা তেমনি সুন্দর চোখ,,,কি শান্ত অথচ গভীর দৃষ্টি।।যেন মনে হয় কত কিছু রহস্য লুকিয়ে আছে ঐ শান্ত দীঘির মধ্যে।।
নিজেই নিজের ভাবনায় চমকে যায় ।।।।
এদিকে মিলিকে নিয়ে সরে আসলে ড্রাইভার থুড়ি রোহান চোখে সানগ্লাস লাগিয়ে একবার মিলিকে দেখে নিয়ে গাড়ি স্টার্ট দেয়।।।
- মিলি --তুই এইটা করতে পারলি আমার সাথে,,,বলেই কথার ওপর রাগে চেঁচিয়ে বললো।।
- কথা --তোহ কি করতাম তোর মতো ওদের সাথে ঝগড়া করতাম।।
- মিলি-- দোষটা কিন্তু আমাদের ছিলোনা ঐ ড্রাইভারটা যদি অন্ধ হয় তবে আমার কি করার আছে,,,অত জায়গা থাকতে আমাদেরই পিছনে হর্ন কেনো বাজাচ্ছিলো।।।
- ক্থা-- ছেড়ে দে যা হবার হয়ে গেছে চল তাড়াতাড়ি নাহলে সত্যিই আর ক্লাসে ঢুকতে দেবেনা।।
- ওরা তাড়াতাড়ি করে পা চালিয়ে ক্লাসে আসে দেখে তখনো প্রফেসার আসেনি তাই নিশ্চিন্তে ওদের জায়গায় গিয়ে বসে।।।
এই তোদের আজকে এত দেরি কেন হল রে,,,রিয়া বলতেই মিলির মুখটা গোমড়া করে বইয়ের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়।।
সেটা দেখে আকাশ বলে ওই ফুলঝুরি( মিলিকে রাগানোর জন্য নামকরণ) তোর আবার কি হলো এই রকম চুপসে আছিস কেন ?
ওর কথায় মিলি রেগে বললো -- এই যে শুকনো লঙ্কা আমাকে না জিজ্ঞাসা করে তোদের কথাকে বল,,ও সব তোদের গুছিয়ে বলে দেবে,,,বলেই আবার বইয়ে মুখ ডোবালো।।
সবাই কথার দিকে কৌতূহলে দেখতে ও আজকের সব কিছু খুলে বললো।।
সবাই ওটা শুনে বললো দেখ মিলি সব জায়গায় ঝগড়া করা চলে না কথা কিন্তু বুদ্ধি দিয়ে একটা ঝামেলা হবার আগেই মিটিয়ে নিল।।ধর ওরা যদি প্রিন্সিপালের কাছে তোর নামে কমপ্লেইন করতো তখন কি হতো,,, তাই সব সময় রাগ করা উচিত নয়।।
মিলিও ওদের কথা শুনে কিছু ভাবলো আর বললো,,হম্ম তোড়া ঠিকই বলেছিস বাট ওই উদগাণ্ডু তা এমনই বললো যে মাথা তা গরম হয়ে গেল,,,ওকে আর আমি রাগ করবোনা আমার কথারানীর ওপর,,,বলেই একটা চুমু খেলো কথার গালে আর ওর এই কান্ডে সবাই হেসে ফেললো।।।
তখনই ক্লাসে প্রফেসার ঢুকলো ও তাদের সাথে আর ও দুজন ঢুকলো।।তাকে দেখে তো গোটা ক্লাসের মেয়েরা হা করে তাকিয়ে ছিল,,,শুধু কথা তার কাজ করে যাচ্ছিলো সে খাতায় কিছু মন দিয়ে লিখছিলো।।
কিন্তু আরেকজনের তো চোখ বড়ো বড়ো হয়ে গেল,,,কে বলুন তো ,,,,,হমমম আমাদের ফুলঝুরি,,,মানে মিলির।।।।
আর এই দিকে আরেক জনেরও চোখ আটকে আছে কথার ওপর,,,,হম্ম সেটা হলো ঈশানের।।।
- প্রফেসার --স্টুডেন্ট এ হলো রোহান চ্যাটার্জী ,,তোমাদের নতুন ক্লাসমেট।।আর ইনি হলেন ঈশান চ্যাটার্জী,,তোমাদের নতুন ইংলিসের প্রফেসার।।
- সবাই প্রফেসারের কথা শুনে খুব খুশি হয়,,,বিশেষত মেয়েরা।।নতুন প্রফেসার যে এত হ্যান্ডসাম হবে সেটা ওদের এক্সপ্রেশন দেখেই বুঝতে পাড়া যাচ্ছে।।
- নতুন প্রফেসারের কথা শুনে কথা তার খাতা থেকে মুখ তুলে সামনে তাকালো,,,,ঈশানও তারদিকেই চেয়ে ছিল,,দুজনের চোখে চোখ পড়তেই ঈশানের মনে হলো একটা হার্ট বিট মিস হল।।।
- কথার অমন শান্ত দীঘির মতো দৃষ্টি,,,এক ঢাল লম্বা কোমর অব্দি চুল আর লালচে ঠোঁটের পাশে ওই লাল তিল দেখে অজান্তেই ঈশান একটা শুকনো ঢোক গিললো।।।
- পাশেই দাঁড়ানো রোহান ও ঈশানের দৃষ্টি অনুসরণ করে কথার দিকে তাকালো আর অবাক হল ,,,আরে এটা তো ওই মেয়েটা যে আজকে আসার সময় ওই বাঁদর মেয়েটার থেকে বাঁচালো।।।কিন্তু ভাই ওকে এইভাবে কেন দেখছে?,,,,,উমম সামথিং সামথিং।।
- বিকজ আমার সন্ন্যাসী ভাই আজ পর্যন্ত মেয়েদের দিকে তাকানো দূরে থাক কথা শুনেই পালিয়ে যায়,সেখানে এই মেয়েটার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে।।।
- রোহান হেসেই পাশে ঈশানকে কানের কাছে ফিস ফিস করে বললো -- ভাই বৌদিকে কিন্তু দারুন দেখতে আমি বরং এই খুশির খবরটা মা বাপি কে জানিয়ে দি।।।
- রোহনের কথা শুনেই ঈশানের হুস ফিরে এলো আর ও কট মট করে রোহানের দিকে তাকিয়ে রইলো।।।ওর ওই রকম তাকানতে রোহান ও চুপ করে গেল কিন্তু মুচকে মুচকে হাসতে লাগলো।।।
সো স্টুডেন্ট তোমরা তোমাদের মতো নিজেদের সাথে আলাপ করে নিও আমি আপাতত চলি এখন,, আর মি.চ্যাটার্জী আপনি আজকে থেকে এদের ক্লাস নেবেন।।।সো আমি চললাম গুড লাক।।
বলেই প্রফেসার চলে গেলেন আর রোহান ও বাকি সবাই নিজেদের সিটে বসে পরে।।।
Thanks for your feedback