Bondini - Session 1 । Episode - 13 । New Bengali Story 2024
রাজবীরের প্রতি মীরার ভালোবাসা এবং আস্থা থাকলেও কিছু অজানা ব্যাপার তাকে প্রশ্নাতীত করে তোলে। রাজবীরের আচরণের পরিবর্তন, এক মুহূর্তের মধ্যে কোমল থেকে কঠোর হয়ে যাওয়া, মীরার মনে সন্দেহের জন্ম দেয়
![]() |
বন্দিনী :- পর্ব -- ১৩ - Bangla Romantic Golpo
রাজ রেসিডেন্সিয়াল ,,,,,,,,,
রু,,,,,ওঠো আমরা এসে গেছি। নরম গলায় মীরার গালে হাত রেখে ডাকলো রাজবীর।
,
উমমম এসে গেছি হোস্টেলে। রাজবীরের বুকের মাঝ থেকে উঠে বসলো মীরা।গাড়ির জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখলো এটা কোন এলাকা।
বীর,,,,,,, এটাতো আমার হোস্টেল নয়। তাহলে আমরা কোথায় এলাম।
,
রু,,,,,,সব বলছি আগে এসো আমার সাথে। রাজবীর মীরার হাত ধরে ওকে নামিয়ে আনলো গাড়ি থেকে।
তারপর মীরার চোখে একটা রিবন বেঁধে দিল।
,
আরে,,,,কি করছো বীর। চোখ বাঁধছো কেন। আর আমরা এখানেই বা কি জন্য এলাম।
,
শশশশ,,,,,,,,,, ভরসা আছে কি আমার ওপর।
,
এটা আবার কেমন প্রশ্ন।ভরসা না থাকলে কি আমি তোমাকে আমার জীবনে আসতে দিতাম।আমি নিজের থেকেও বেশি তোমাকে বিশ্বাস করি।
,
রাজবীরের ঠোঁটে সন্তোষ পূর্ণ হাসি ফুটে আসলো। তাহলে আমি যেখানে নিয়ে যাচ্ছি আমার সাথে এসো।
রাজবীর মীরাকে নিজের কোলের মধ্যে তুলে নেয়।তারপর আস্তে আস্তে ওকে নিয়ে চলে যায় ভিতরে।
আস্তে করে নামিয়ে চোখ থেকে পর্দা সরিয়ে দেয়।
মীরা আস্তে আস্তে চোখ খুলে দ্যাখে চারিদিকে অন্ধকার হয়ে আছে।
,
মীরা ঘাবড়ে গিয়ে রাজবীরকে ডাকে,,,,,বীর,,,,,কোথায় তুমি।আম,,আমার ভয় লাগছে।
,
মীরার আওয়াজের সাথে সাথেই লাইট জ্বলে ওঠে । মীরা অবাক হয়ে চারিদিকে দেখতে থাকে। চোখের সামনে এতো সুন্দর বাড়ি দেখে।সাদা শ্বেত পাথরের তৈরী গোটা বাড়িটা।তার সাথে পাশ্চাত্য কলার সংমিশ্রণে গোটা বাড়িটাকে সাজানো হয়েছে। বাড়ির অন্দরমহলে ঢোকার সময় বিশাল দরজার ঠিক বামদিকেই বড়ো রাধাকৃষ্ণের মন্দির।তারপর বড়ো ড্রয়ইংহল ,তাতে লাক্সারিয়াস অত্যন্ত দামি সোফায় সজ্জিত।মাথার ওপর যে ঝাড়বাতি টা ঝুলছে সেটার দামও যে কয়েক লক্ষ টাকা সেটা বুঝতে পারলো মীরা।
মীরাকে দরজার বাইরেই রেখে ভিতরে ছিলো রাজবীর। মীরা দ্যাখে রাজবীরের সাথে আর একটা মেয়ে হাতে বরণের থালা নিয়ে ওর দিকেই আসছে।
,
মীরা রাইট,,,,,,,,,,, মেয়েটি হেসে বললো।
,
মীরাতো কিছুই বুঝতে পারছেনা কি হচ্ছে এসব।হসপিটাল থেকে বেরোনোর আগে রাজবীর একটা প্যাকেট দিয়ে বলেছিলো এটা পড়লে ও খুব খুশি হবে।প্যাকেট খুলে মীরা দ্যাখে ওতে একটা লাল রঙের সুন্দর কাজ করা শাড়ি আর তার সাথে মানান সই সব জিনিস আছে।
হঠাৎ শাড়ী দেখে মীরা প্রথমে বুঝতে পারেনি।রাজবীরের ভালো লাগবে ভেবেই ওর পড়া।কিন্তু এখন এইসব কি হচ্ছে সেটাই ওর মাথায় ঢুকছেনা।
,
সোহা,,,,,,,,,,,,, একজন বয়স্ক মহিলা মেয়েটার পাশে এসে দাঁড়ালো।
মামুউউউউউউউ,,,,,,,,একটা 4 বছরের বাচ্ছা ছেলে রাজবীরের গলা জড়িয়ে ওর কোলে উঠে পরলো।
,
সোহা নাও তাড়াতাড়ি মীরাকে বরণ করে ঘরে নিয়ে আসো। এই কে আছিস দুধে আলতার থালাটা নিয়ে আয়।
আর রাজ মন্দিরে রাধা কৃষ্ণের সামনে এসে তুমি মীরার সিঁথিতে সিঁদুর পড়িয়ে দিও।দ্যাখো যতই লিগ্যালি ও তোমার ওয়াইফ হোকনা কেন।সিঁদুর ছাড়া কখনোই কোনো বিয়ে সম্পন্ন হয়না।
,
গায়িত্রী দেবীর কথা শুনে মীরার মাথা ঘুরে উঠলো।লিগ্যাল ওয়াইফ? বিয়ে? কি সব বলছে এরা। ওর কখন রাজবীরের সাথে বিয়ে হলো।
মীরা হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো রাজবীরের দিকে।
,
রাজবীর মীরার মনের অবস্থা বুঝতে পারছে তাই আর দেরি না করে মীরার সামনে এসে বললো,,,,,,,,,,,, রু আই এম সরি। আমি তোমাকে আগে থেকে কিছু না বলেই আমার আর তোমার রেজিস্ট্রি পেপারে সই করিয়ে নিয়েছি।
,
হোয়াটটটটট,,,,,,রেজিস্ট্রি পেপারে সই। মানে এটা কখন কিভাবে হলো। আর আমাকে লুকিয়েই বা কেনো করলে।
,
কারণ আমি তোমাকে হারাতে চাইনি বলে।
,
রাজবীরের পাগলামো দেখে মীরা হাসবে না কাঁদবে কিছুই ভেবে পেলোনা।
বীর আমাকে প্লিজ একটু বুঝিয়ে বলবে এক্সাক্টলি কি হচ্ছে।
,
তুমি যখন হসপিটালে যাও তারপর থেকে এখন অব্দি আমি সবসময় তোমার সাথে ছায়ার মতো থাকি। সেই সময় ডক্টর সেন ও তোমার দাদার কিছু কথা আমার কানে আসে।
,
কি কথা।
,
তুমি তো মনিকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলে তাই ডক্টর সেনের কিছু ব্যবহার তোমার চোখে পরেনি।পড়লে তখনই বুঝতে পারতে ও তোমার প্রতি কতটা দুর্বল। আর তারজন্যই বন্ধুর বোনের সাথে বন্ধুত্ব করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল।
তুমি না বুঝতে পারলেও তোমার দাদা ঠিক বুঝতে পেরেছিল।আর তাই সে তার বন্ধুকে আড়ালে ডেকে জিজ্ঞাসাও করে যে হঠাৎ তার এমন ব্যবহার কি জন্য।ও কি মীরাকে পছন্দ করে।
ডক্টর সেন নিজের বন্ধুর কাছে অপকটে সব স্বীকার করে যে ও তোমাকে পছন্দ করে এবং বিয়ে করতে চায়।
মনি বাদে একমাত্র তুমি একটা মানুষেরই কথাকে মান্য করো আর সেটা হলো তোমার দাদা।তাই ডক্টর সেন তোমার দাদার কাছেই তোমাকে চেয়েছিল।আর তোমার দাদাও বলেছিলো যে মনির অপারেশনের পর তোমার সাথে এই নিয়ে কথা বলবে।
এমনিতেই তুমি আগে থেকে আমার ওপর রেগে ছিলে।তার ওপর যদি আমি তোমাকে বলতাম যে আমি তোমাকে এই মুহূর্তেই বিয়ে করতে চাই তাহলে আমি কনফার্ম তুমি কিছুতেই সেটা হতে দিতেনা। তাই আমি কোনো রিস্ক নিইনি।ডেভিড কে দিয়ে অপারেশনের কাগজের সাথেই আমার আর তোমার রেজিস্ট্রি পেপারেও আমি সাইন করিয়ে নিই।
,
আচ্ছা সব বুঝলাম কিন্তু আমাদের মধ্যে যখন সব ঠিক হয়ে গেলো তখন তুমি কেন আমাকে সত্যিটা বল্লেনা।মা যদি শোনে তাহলে কতটা আঘাত পাবে তুমি ভাবতে পারছো।
,
মনি জানে।
,
কিহহহহহ,,,,,,,,,
,
হম্ম মনি জানে। একচুয়ালি আমিই মনিকে সবটা বলি আর মনি ঠাম্মির সাথে সব কথা বলে নেয়।
,
মানে এখানে সবাই সবকিছু জানে অথচ সবার প্রথমে আমার জানার কথা আর আমিই সবার শেষে জানলাম।
,
রু,,,তুমি আমাকে ভুল বুঝছো,,,,প্লিজ,,
,
রাজবীরকে হাত দেখিয়ে থামার নির্দেশ দেয় মীরা।
এতক্ষনে গায়িত্রী দেবী ও সোহা দুজনেই এদের দুজনের কথা শুনছিল। সোহা একবার ওর ঠাম্মির দিকে তাকিয়ে চোখের ইশারায় কিছু বললো।গায়িত্রী দেবী ওকে আশ্বাস দিয়ে মীরাকে বললো,,,,,,,,, মীরা,,,,,আমি মানছি আমার নাতির নেওয়া এই স্টেপটা তুমি হয়তো মানতে পারছোনা।আমি জানি ওর পদ্ধতিটা ভুল।তবুও আমি তোমাকে বলছি একবার ভেবে দেখতো যাকে ভালোবাসে তাকে চোখের সামনে অন্যের হয়ে যাওয়াটা কিভাবে দেখবে।
রাজের মুখেই শুনেছি তুমি তোমার দাদাকে খুব ভালোবাসো, আর দাদার সব কথাই শোনো।তাই হয়তো ও ভেবেছিলো তুমি বোধহয় ওই ডাক্তারের দেওয়া প্রস্তাবটা মেনে নেবে।কারণ এর আগেও তোমার সাথে যার বিয়ে হওয়া ঠিক হয়েছিল সেটাতেও তোমার মত না নিয়েই তোমার মা ঠিক করে দেয়।আর দ্যাখো তার ফল কি হয়েছে।তাই রাজবীর আর কোনো উপায় না দেখেই একপ্রকার বাধ্য হয়েই এই কাজটা করেছে।তাতে অবশ্যই আমার আর তোমার মায়ের কাছ থেকে বকুনিও খেয়েছে বেচারা।
আসলে কি জানতো সাহিল আর তোমার বাবার এমন একটা জঘন্য চক্রান্তের জন্যই রাজ এই স্টেপটা নিয়েছে।আমার নাতিটা যে সিদ্ধান্তই নিকনা কেনো আমি জানি তাতে নিশ্চই এমন কিছু প্রব্লেম আছে যার জন্য ওকে এই স্টেপ নিতে হয়েছে।
,
মীরা আমি সোহা রাজের দিদি। জানো মীরা আমার এই ভাইটা যে কাউকে এতটা ভালোবাসে সেটা তোমাকে না দেখলে জানতেই পারতামনা। কে বলবে এই গোমড়ামুখো কাজপাগল ছেলেটা একটা মেয়ের জন্য গত দুদিন ধরে নিজের সমস্ত কাজ,মিটিং সবকিছুকে সরিয়ে রেখে শুধুমাত্র তোমার জন্য তোমার কাছে থেকে গেছে।
,
আহ দি,,,, ছাড় না কি সব বলছিস।আর কিচ্ছু ক্ষতি হয়নি। যা হয়েছে আমি সব সামলে নেবো। তোরা এখন যে কাজটা করছিস সেটা তাড়াতাড়ি কর।ও কাল থেকেই প্রায় রাত জাগা তাই ওর রেস্ট নেওয়াটা খুব প্রয়োজন।
,
দেখেছো মীরা আমার ভাইয়ের তোমার প্রতি কতটা খেয়াল আছে।
,
সোহার কথা শুনে মীরা লজ্জায় মুখ নামিয়ে নেয়। কিন্তু এতকিছুর পরেও ওর এই ভাবে বিয়ে করাটাকে ও কেন যে মন থেকে মেনে নিতে পারছেনা কে জানে।
,
সোহা দিদিভাই তুমি মীরা দিদিভাইকে বরণ করে ঘরে তোলো।আর দাদুভাই তুমিও মীরা দিদিভাইয়ের পাশে দাঁড়াও।তোমাদের দুজনকেই একসাথে বরণ করা হবে।
,
ও বলো থাম্মি আমাকেও বলন কলবে। ছোট্ট ছেলেটা গায়েত্রী দেবীকে বললো।
,
হ্যাঁ আমার জাদুসোনা তুমিও তোমার মামু আর মিমির সাথে বরণ হবে।
,
বলো থাম্মি ওতা আমাল মিমি।মামুর বৌ।
,
হ্যাঁ জাদুসোনা ওতা তোমার মামুর বৌ।
,
বাচ্ছাটা রাজবীরের কোল থেকে মীরার কোলে গিয়ে মীরার দুই গাল ধরে বললো,,,,,,,কি মিত্তি তুমি মিমি। তুমি মামুর না তুমি আমাল বৌ।ও মাম,,,,, মিমি আমাল বৌ তো।দ্যাখো কি সুন্দল দেখতে মিমিকে।
,
ওর কথা শুনে সবাই হেসে ওঠে।মীরা বাচ্ছাটার গালে চুমু দিয়ে বললো,,,,,,কি নাম আমার এই ছোট্ট বরটার।
,
আমাল ভালো না আদৃত লাজপূত( রাজপূত) আল ডাক নাম তোজো।
,
মীরা চমকে উঠলো তোজোর ভালো নাম শুনে।কারণ ওর টাইটেল যে রাজপূত।
,
রাজবীর কিছুটা তাড়াতাড়িই তোজোকে মীরার কোল থেকে নিয়ে সোহাকে বললো,,,,,দি তাড়াতাড়ি নে আমিও খুব টায়ার্ড আর কিছু ফোন কলস ও করতে হবে।
,
হ্যাঁ এই তো দাঁড়া তোরা একসাথে পাশাপাশি।
,
হঠাৎ রাজবীরকে এমন তাড়া দিতে দেখে কিছুটা অবাকই হয় মীরা।কিন্তু এখন ওর কোনো কথাই বলতে ইচ্ছে করছেনা।যা হচ্ছে সেটা মেনে নিয়েই এক প্রকার ঘরের মধ্যে প্রবেশ করার জন্য মনকে প্রস্তুত করলো।
,
একে একে বরণ করে মীরা আলতা থালায় পা দিয়ে প্রবেশ করলো রাজ প্যালেসের ভিতরে। রাজবীরদের যে টাকা পয়সা আর বৈভবের যে কোনো অভাব নেই সেটা দেখলেই বোঝা যায়।
,
গায়েত্রী দেবী ওদের দুজনকে রাধামাধবের মূর্তির সামনে এনে দার করায়।তারপর রাজবীরকে বলে,,,,,,,দাদুভাই একবার মীরা দিদিভাইয়ের মাকে ফোন করোতো।
,
মীরা সপ্রশ্ন গায়েত্রী দেবীর দিকে তাকালে গায়েত্রী দেবী বললেন,,,,,,,,আমি তোমার মাকে বলেছিলাম রাজবীর যখন তোমাকে সিঁদুর পরাবে তখন তোমার সামনেই পরাবে।
,
মীরা ঠিক কি বলবে এই কথার জবাবে বুঝতে পারলো না।
এদিকে রাজবীর ডেভিড কে কল করলো।
ডেভিড তুমি মনির কেবিনে যাও আর ভিডিও কল করো।
,
ওকে প্রেসিডেন্ট।
,
কিছুক্ষন পরেই রাজবীরের ফোনে ভিডিও কল আসলে ও রিসিভ করে দ্যাখে সামনে মিনালদেবী হাসি মুখে চেয়ে আছে মীরার দিকে।
,
মায়ের হাসি মুখটা দেখে মীরা মনে শত অভিমান থেকেও কিছু বলতে পারলোনা।
,
কিন্তু মিনালদেবী মেয়ের মনের কথা তার চোখ দেখেই বুঝতে পেরে গেলো।তাই একটু হাসি মুখেই মীরাকে বললো,,,,,,,মীরু মা আমার,,,,,,রাগ হয়েছে মায়ের ওপর।
,
মীরা কিছু না বলে মুখ নামিয়ে নেয়।
,
কিন্তু মিনালদেবী মীরাকে বললো,,,,,,দ্যাখ মা আমি জানি এই রকম না জানিয়ে হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হয়নি আমাদের।কিন্তু মা আমি তোর ভালোর জন্যই এই বিয়েতে মত দিয়েছি।
,
কিন্তু মা সেটা আমাকে একবারের জন্যও বলবেনা তোমরা।
,
বলার মতো সময় পাইনি বিশ্বাস কর।একের পর এক আঘাত পাচ্ছিলিস তুই মীরু। প্রথম নিজের বাগদত্তাকে নিজেরই বেস্টফ্রেন্ডের সাথে ওই ভাবে দ্যাখা।তারপর যে জন্মদাতা সেই নিজের ভালোর জন্য সাহিলের সাথে ডিল করা। তারপর আমার চিকিৎসা। এতো কম বয়সে একের পর এক আঘাত সহ্য করতে হয়েছে তোকে।তার ওপর আজকেই আবার সাহিল এসে রীতিমতো তোকে অপমান করেছে।তুই কি ভাবছিস আমি কিছু জানতে পারবোনা।
আরে তুই খাবার খাইয়ে চলে যাবার পর অনিতা আমাকে ফোন করে।এবং সব কিছুর জন্য ও তোকেই দোষ দেয়।আর এটার শেষ দেখবে বলেও জানায়। এবার তুই বল মা হয়ে কি তোকে একা কিভাবে ছেড়ে দিতে পারি আমি।যখন এটাও জানি হোস্টেলে ফিরে গেলে ওই তৃণা তোর সাথে কি রকম খারাপ ব্যবহার করবে।
দ্যাখ সোনা আমি একজন মা তাই নিজের সন্তানের ভালোর জন্য আমার যেটা ভালো মনে হয়েছে আমি সেটাই করেছি।আর আমার এই পাগল ছেলেটার ওপর ভরসা আছে ,,,ও তোকে সুখী রাখবে খুব।
,
মিনালদেবীর কথা শুনে রাজবীর নিজের চোখটা মীরার দিক থেকে সরিয়ে নেয়।
,
মাসিমা আপনারা সিঁদুর পড়ানোর ব্যবস্থা করুন।
,
সোহা একটা থালায় মালা ও আর একটা থালায় সিঁদুর ও দুটো রিঙ্গের বক্স নিয়ে আসলো।
ভাই তুই প্রথমে মীরাকে মালা পড়িয়ে দে।
রাজবীর ওর দিদির কথা অনুযায়ী মীরাকে মালা পরিয়ে দিল।
,
এবার মীরা তুমি ভাইকে মালা পরিয়ে দাও। সোহার কথা অনুযায়ী মীরাও রাজবীরকে মালা পরিয়ে দিতে যায়। কিন্তু মালা পরাবার সময় মীরার চোখ পরে রাজবীরের ওপর। রাজবীর এক অদ্ভুত দৃষ্টিতে মীরাকে দেখতে থাকে।
মীরার মনের ভিতরটা হঠাৎই অজানা কোনো আশংকায় কেঁপে ওঠে। এই দৃষ্টিতে না আছে কোনো ভালোবাসা আর না আছে কোনো ভরসা।আছে এক রাশ ঘৃণা আর প্রতিহিংসা।
মীরা মনে মনে ভাবে,,,,,, বীর হঠাৎ এইভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে কেন। তবে কি আমি কোনো ভুল করলাম।
,
মীরার হাত হঠাৎ মালা পরাতে গিয়ে থমকে যাওয়াতে সোহা, মিনালদেবী বললো,,,,কি হলো মীরু মালাটা পরিয়ে দে রাজকে।
মায়ের গলার আওয়াজ পেতে মীরার ধ্যান ভাঙে।ও আবার রাজবীরের দিকে তাকায়, কিন্তু এবার দ্যাখে রাজবীর সেই আগের মতোই ওর দিকে ভালোবেসে তাকিয়ে আছে।আর ইশারায় ওকে মালা পরাতে বলছে।
,
নাহ মনে হচ্ছে আমারই মনের ভুল।বীর যদি খারাপই হত তবে ওই ভাবে আমাদের সাহায্য করতো না। আমার এই ভাবে ওকে ভুল বোঝা উচিত হয়নি। তারপর হালকা হেসে রাজবীরকে মালা পরিয়ে দেয়।
,
দাদুভাই এবারে ঠাকুরের পায়ে ছোঁয়ানো এই সিঁদুরটা তুমি মীরা দিদিভাইয়ের সিঁথিতে পরিয়ে দাও।
,
রাজবীর গায়েত্রী দেবীর কথা শুনে সোনার আংটি দিয়ে মীরার সিঁথিতে পরাতে গেলো।
এক মুহূর্তের জন্য মীরার সাথে রাজবীরের চোখে চোখ পরে যায়।সেই দৃষ্টিতে একজনের মনে ছিলো অগাধ বিশ্বাস আর ভালোবাসা।আর একজনের মধ্যে ছিলো কপোতটা।
রাজবীরের নামে সিঁথি ভোরে উঠলো মীরার।একফোঁটা চোখের জল বেরিয়ে এলো ওর চোখ থেকে। খানিক্ষনের জন্য থমকে গেছিলো রাজবীরের দৃষ্টি নিজের সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে দেখে।
,
মাম,,,,,,মামুর বিয়ে হয়ে গেলো।
,
হ্যাঁ সোনা,,,,তোমার মামুর বিয়ে হয়ে গেলো।
,
ইয়েএএএ,,,,,কি মজা। আমি আমার সব ফ্রেন্ডদের বলবো।
,
যাও দাদুভাই আগে রাধামাধবকে প্রণাম করো।
,
ওরা দুজনেই গেলো রাধা কৃষ্ণের সামনে।
,
মীরা,,,,,, আমার কেন মনে হচ্ছে কৃষ্ণ এই বিয়েটা হয়ে ঠিক হয়নি।মনে হচ্ছে কোনো ঝড় আসতে চলেছে যেটা আমি দেখতে পাচ্ছিনা। জানিনা আমার মন কেন এতো অশান্ত লাগছে। তুমিতো আমার সখা বলো,,আমি জানি তুমি যেটা করবে আমার জন্য ভালোই করবে।আমি সব কিছু তোমার ওপর ছাড়লাম।
,
রাজবীর,,,,,,,, ওয়েল কাম টু হেল মিসেস মীরা রাজবীর সিংঘানিয়া। তুমি নিজেও জানোনা তুমি কত বড়ো জালে জড়িয়ে পরেছো। এইবার বুঝবে এই রাজবীর সিংঘানিয়া ঠিক কি জিনিস।
কথাটা বলেই ও গায়েত্রী দেবীকে বললেন ঠাম্মি আমি নিজের রুমে গেলাম।কিছু জরুরি ফোন কলস আছে।
,
রাজবীর যেতে গেলে সোহা ওর ভাইকে ডাকে,,,,,,,দাঁড়া ভাই তুই কি ভুলে গেছিস এই বাড়ির একটা নিয়ম আছে।
,
উফফ কি নিয়ম আর বাকি আছে।যা করবি তাড়াতাড়ি কর। কিছুটা বিরক্ত হয়েই বললো রাজবীর।
,
মীরা তো দেখে যাচ্ছে রাজবীরের মুখের প্রত্যেকটা এক্সপ্রেশন। ও যে খুব বিরক্ত হচ্ছে সেটা স্পষ্ট।কিন্তু ও এতোই যদি বিরক্তবোধ হয় তাহলে বিয়ে কেন করলো। কারণ মীরাতো নিজেই চায়নি এই বিয়েটা এখন করতে।
,
ভাই ,,,,, আমাদের বাড়িতে নতুন বৌকে তার ঘরে কিন্তু কোলে করেই নিয়ে যেতে হয়। আশাকরি তোর মনে আছে আমার বে,,,,,,
কথাটা বলতে বলতেই থেমে যায় সোহা। আর রাজবীরের চোখে মুখে ফুটে ওঠে এক পৈশাচিক রাগ।
,
দাদুভাই তুমি মীরা দিদিভাইকে কোলে করে তোমার ঘরে নিয়ে যাবে।
,
হোয়াট,,,,,, কেনো মানে দ্যাখো ও তো নিজেই চলে যেতে পারবে।কি মীরা তুমি পারবে তো একা যেতে।
,
মীরা মনে মনে কষ্ট পেলেও মুখে বললো পারবো।
,
সি দ্যাখো ও পাড়বে বললো । তাহলে আমি এখন যাই।
,
রাজবীরররর,,,,, গায়েত্রী দেবীর গম্ভীর গলার আওয়াজ শুনে রাজবীর বাধ্য হয়েই মীরাকে কোলে তুলে নিলো।
,
মীরা ভয় পেয়ে রাজবীরের গলা জড়িয়ে ধরলো।কিন্তু রাজবীর একবারের জন্যও মীরার দিকে তাকালো না।
,
FAQ
কি ঘটবে? রাজবীরের প্রকৃত উদ্দেশ্য কী, আর মীরা এই নতুন জীবনের সামনে কী দেখতে পাবে? তার চিন্তা, ভয়, আর কৌতূহল নিয়ে কি সে রাজবীরের পরিবার এবং তার নতুন অবস্থার সাথে মানিয়ে নিতে পারবে?
গল্পে একটি টানটান উত্তেজনা ও রহস্যের আবেশ তৈরি হয়েছে। রাজবীর এবং মীরার সম্পর্কের মধ্যে এমন কিছু জটিলতা লুকিয়ে আছে যা ধীরে ধীরে প্রকাশিত হতে থাকবে। রাজবীরের এই আচরণ এবং তার অতীতের সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু তথ্য হয়তো মীরাকে এক বড় চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড় করাবে।
Thanks for your feedback