ভালোবাসার গল্প: চোখের ভাষায় বাঁধা মনের ব্যথা
বাংলা রোমান্টিক গল্প যা আপনাকে মুগ্ধ করবে এবং ভালোবাসার প্রকৃত অর্থ অনুভব করতে সাহায্য করবে।
কথার ফাঁকে কথার ব্যথা
কথার মাঝে তোমায় দেখা
কথার জালে কথার তালে
কথার সাথে ভালোবাসলে
কথার মাঝে ছিলে তুমি
কথার শেষেও তুমি
কথার সাথে বিচ্ছেদে তাই
তুমিহীন অলিখিত আমি।।(নিজস্বী)
পরিচিতি (Introduction):
কলি, সরল এবং মিষ্টি স্বভাবের মেয়ে, যার জীবন গড়ে উঠেছে তার পরিবার এবং প্রিয় বন্ধুদের নিয়ে। অন্যদিকে ইভান চ্যাটার্জী একজন ধনী ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, কিন্তু অন্তরে তিনি খুব মানবিক, কলির সঙ্গে রাস্তায় দেখা হওয়া তাকে অস্থির করে তোলে গল্পটি পাঠককে নিয়ে যাবে প্রেমের সূক্ষ্ম আবেগ, দায়িত্ববোধ, এবং জীবনের গভীর প্রশ্নের জগতে।
Sedin Choitro Mash
Episode 10
বাইরে গাড়িতে হেলান দিয়ে ইভান কলির কথাই ভাবছিলো।।
"মেয়েটা বড্ডো ছিচকাদুনে ,,,কথায় কথায় চোখে জল আর সাথে ঠোঁট ফোলানো।।কিন্তু তাতেও ওকে খুব কিউট লাগে,,মনে হয় গালগুলো ধরে চটকে দি।।
ইভান নিজের ভাবনায় নিজেই চমকে যায়।।
এদিকে,,,,,,কলিরা কেবিন থেকে বেরোবার পর মিতাদেবী চোখ বন্ধ করে কিছু জিনিস ভাবছিলেন,,,,,,* ছেলেটার চোখে আমি কলির জন্য মুগ্ধ দৃষ্টি আর আগলে রাখার যত্ন দুটোই দেখেছি*।
এতটা ভুল হতেই পারেনা।।তবুও আমি এখন কিছু বলবোনা ওরা নিজেরাই আগে বুঝুক ওদের মনের কথা।।কিন্তু ইভান ছেলেটা বড্ডো ভালো,,কি সুন্দর কথা ওর ,,মনেই হলোনা আমি ওর অপরিচিত কেউ।।
এই রকম ছেলে যদি আমার কলির দায়িত্ব নেয় তবে আমি মরেও শান্তি পাবো।।
**********************************
হসপিটালের বাইরে,,,,,
কলি আর মিলি বাইরে এসে দেখলো একটা ব্ল্যাক BMW গাড়ির সামনে হেলান দিয়ে ইভান দাঁড়িয়ে আছে,আর ওর নজর ওর ফোনের দিকে।।কিন্তু কলি দেখলো হসপিটালের ছেলে থেকে বুড়ো এমন কেউ নেই যে ইভানকে ঘুরে ঘুরে তাকিয়ে দেখছেনা।।আসলে ওকে যে কেউ না দেখবে সেটাই আশ্চর্যের।।ওর মতো হ্যান্ডসাম ছেলে খুব কমই দেখা যায়।।তার ওপর ওর পার্সোনালিটি ও দারুন।।সব মিলিয়ে মেয়েদের মধ্যে ওকে দেখার একটা আকর্ষণ আছে।।
- **মিলি ---স্যার আমরা এসে গেছি।।
- **ইভান -- মিলি আমি তোমার দাদার স্যার,,তোমার কিন্তু নয়।।তাই তুমি আমাকে ইভান দা বলতে পারো।।
- কথাটা শুনে মিলির মুখে হাসি ফুটলো।।ও বললো ওকে স্যার,,,,,উমম না মানে ইভান দা।।
- আসা থেকে কলি একবারও ওর দিকে চোখ তুলে তাকায়নি,, আসলে কেবিনে ইভানের নামে যেগুলো বলেছিলো আর মিহির তার পরিপ্রেক্ষিতে ইভানের হয়ে যা যা বললো সেগুলোর জন্যই ওর নিজেকে খুবই অপরাধী লাগছে।।
- কলির মুখের দিকে চেয়ে ইভান মিলিকে বললো তাহলে যাওয়া যাক।।
- হ্যা হ্যা চলো চলো অনেকটাই দেরি হয়ে গেলো,,,,বলেই ও কলির হাত ধরে পিছনের সিটে বসতে গেলে ইভান মিলিকে বললো,,,,, মিলি তোমাদের কি মনে হয় আমি কি ড্রাইভার?
- ইভানের কথা শুনে কলি আর মিলি দুজনেই ওর দিকে প্রশ্ন নিয়ে দেখলো।।।।
- ** না আসলে তোমরা দুজনেই পিছনে বসছো তাই নিজেকে কেমন ড্রাইভার লাগছে।।
- ওর কথা শুনে কলি মিলিকে বললো তুই সামনে চলে যা আমি পিছনে বসছি।।
- কলির কথাটা শুনেই ইভানের মাথাটা গরম হয়ে গেল।।ও কলিকে বললো কেনো আপনি সামনে বসলে কি আমি আপনাকে খেয়ে ফেলবো?
- ইভানের কথা শুনে কলি ভ্যবাচ্যাকা খেয়ে ওরই মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো।।আর মিলি ওদের এই অবস্থা দেখে মিটিমিটি হাসতে থাকলো।।
মিলি---- উমম বলছি কলি তুই সামনে বস আমি পিছনে একটু হাত পা ছড়িয়ে বসি বুঝলি।।কি ইভান দা আমি তোমার গাড়িতে পা তুলে একটু আরাম করে শুতে পারি তো?
ইভান হেসে ওকে বললো তুমি আমার বোন ঈশুর মতোই তাই তোমার যেমন ভাবেই ইচ্ছে তেমন ভাবে যেও।।
এদিকে বোন বলছো আর তুমিও বলছো?এটা ঠিক নয়।।।
আরেএএএ ঠিক আছে আজ থেকে তুই বলবো,,,,শান্তি?
ওম শান্তি,,,,,,বলতেই ওরা দুজনেই হেসে উঠলো।।
ওদের কে এইসব বলতে দেখে কলি তো অবাক হয়ে দেখছে দুজনকে।।
**এই যে ম্যাডাম,,,আজকে কি কলেজ যাবার ইচ্ছে নেই।।যদি না থাকে তবে বলুন আমি অন্য কিছুর ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।।
ইভানের কথা শুনেই কলি তাড়াতাড়ি সামনে বসে পরে।।কিন্তু এতো দামি গাড়ি চড়ার অভ্যাস তো ওর নেই তাই এখানের সব সিস্টেমও ওর অজানা।।
ইভান ওকে কনফিউজ দেখেই বুঝতে পারে যে ও সিট বেল্ট লাগাতে পারেনি।।ইভান ওর সামনে একটু ঝুকে আসে,,,
ইভানকে ওর এতো পাশে দেখে কলির বুকটা খুব জোরে দৌড়োতে শুরু করে।।
বেল্ট লাগানোর সময় দুজনই দুজনের চোখে আবদ্ধ হয়ে পরে।।ইভানের গায়ের ফ্রেঞ্চ ওয়াইল্ড পারফিউমের আর ওর নিজেস্ব পুরুষালি গন্ধ মিশে কলিকে আচ্ছন্ন করে দিছিলো।।কলি লজ্জায় চোখ বন্ধ করলেও ওর গালে রক্তিম আভা লোকাতে পারেনি।।আর ইভানও কলির গা থেকে একটা মিষ্টি ফুলের ঘ্রান পাচ্ছিলো।।।
ইভানও কলিকে ভালো করে দেখছিলো,,,,,বিশেষত কলির ঠোঁটের নিচে যে লাল তিলটা আছে ওটা দেখেই ও একটা শুকনো ঢোক গিললো।।।তাড়াতাড়ি বেল্ট লাগাতে গিয়ে দুজনেরই হাতের স্পর্শ হলো আর দুজনেই হালকা কেঁপে উঠলো।।।একটা অন্য রকমের ফিলিংস দুজনেই উপলব্ধি করতে পারছিলো।।
- ওদের দুজনেরই এই অবস্থা পিছন থেকে দেখে মিলির খুব হাসি পাচ্ছিলো।। কেবিনেই ইভানের দৃষ্টি দেখে ও বুঝতে পেরেছিল ইভানের মনের কথা।।আসলে পুরুষের এই মুগ্ধকর দৃষ্টি বোঝার মতো বয়স মিলির আছে।।এরকম দৃষ্টি ওর আরও একজনের কথা মনে পরে গেল,,,,,ওদের কলেজের স্যার ঈশানের।।সেও সেদিন কলিকে ঠিক এই ভাবেই মুগ্ধ দৃষ্টিতে দেখছিলেন।।এদের দুজনের দৃষ্টিতে কোনো রকমের লালসা নেই,,,আছে শুধুই ভালোবাসা আর মুগ্ধতা।।
- তবে কি ঈশান স্যার ও কলিকে?,,,,নাহ আমাকে কলির সাথে এই নিয়ে কথা বলতে হবে।।যদি আমার অনুমান সঠিক হয় তবে এদের একজনকে তো আঘাত পেতেই হবে তাই আগে থেকে কলিকে সাবধান করে দিতে হবে।।যদিও আমার বেস্টির জন্য ইভান দার মতোই একজন কে পছন্দ তবে ঈশান স্যারও খারাপ নয়।।
- কিন্তু এইসব পরের কথা আমাকে আগে জানতে হবে কলি কি চায় আর কাকে।।কারণ সবথেকে বড়ো কথা ওর ভালো থাকার।।ও এইসব ভাবতে ভাবতে কানে হেডফোন গুঁজে চোখ বন্ধ করলো।।
- এদিকে গাড়ি চালাতে চালাতে ইভান মাঝে মাঝেই কলির দিকে আড় চোখে দেখে যাচ্ছিলো।।জানলার খোলা হাওয়ায় কলির মুখে কিছু চুল উড়ে পরছিলো আর ও বার বার বিরক্ত হয়ে সেটা কানের পাশে গুজে দিছিলো।।ইভানের এইসব দেখে খুব ইচ্ছে করছিল কলির চুল গুলোতে স্পর্শ করার।।হিংসেও হচ্ছিলো চুলগুলোর ওপর।।
কলি যখন বিরক্ত হয়ে চুলগুলো কে খোপা করতে যায় তখনই ইভান বলে,,,,,"থাকনা খোলা চুলগুলো।।ওগুলো খোলা রাখলেই আপনাকে ভালো লাগে"।।
ইভানের কথা শুনে কলি বড়ো বড়ো চোখ করে ওর দিকে দেখলে ওর হুঁশ ফেরে যে ও কি বলে গেল এই মাত্র।।দুজনেই খুব অপ্রস্তুতে পরে যায় আর সেটা কাটাতেই ইভান চুপ করে গাড়ি চালানতে মন দেয়।।আর কলি,,,,,সে তো লজ্জায় জানলার দিকে সেই যে মুখ ফিরিয়ে বসেছে আর ইভানের দিকে তাকায়নি।।তবে দুজনের ঠোঁটেই একটা হালকা হাসি ফুটে উঠেছে।।
সমাপ্তি (Conclusion):কলেজের সামনে আসতেই ইভান বললো ,,,,,আপনি কি বিকালে হসপিটালে যাবেন?
কলি মুখ নিচু করেই জবাব দিলো,,,,হম্ম।।
কিন্তু কলির এই ব্যবহারে ইভানের খুব রাগ হলো।।কলি কেনো ওর দিকে না তাকিয়ে জবাব দিলো।।তাহলে কি ওরই একার অনুভূতি হয়েছে,,,,কলির কি কিছুই মনে হয়নি।।কথাটা মাথায় আসতেই ও রাগে গম্ভীর স্বরে বললো,,,,,
"মিস ব্যানার্জী এরপর থেকে আমার সাথে কথা বলতে গেলে হয় চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলবেন নাহলে কথা বলতেই হবেনা।।কারণ যারা চোখ নামিয়ে কথা বলে আমি সেইসব মানুষদের ঘৃণা করি।।আশা করি ভবিষ্যতে আমার এই কথাটা আপনার মনে থাকবে।।আবার যান নাহলে দেরি হয়ে যাবে।।বলেই ও গাড়িতে স্টার্ট দেয়"।।
পিছন থেকে মিলি ওকে টাটা করলে ও মিলিকে হেসে রিপ্লাই দেয় কিন্তু কলির দিকে কঠিন চোখে তাকিয়ে চলে যায় গাড়ি নিয়ে।।।
***কলি মনে মনে,,,,""আমি কি এমন করলাম যে উনি সবসময় আমাকে এই রকম ভাবে বলেন।।কই মিলির সাথে তো এইরকম করেননা তবে,,,,আমি কি দোষ করলাম।।আসলে ওনার চোখের দিকে তাকালেই আমার বুকটা খুব জোরে দৌড়ায়,,মনে হয় ওনার ঐ গভীর চোখ আমাকে কিছু বলতে চায়।।ওনার ঐ গভীর চোখে লুকানো অনেক ব্যথা আমি অনুভব করতে পারি আর তাইতো ওনার চোখের দিকে তাকাতে পারিনা।।।**
এই যে মহারানী কি ভাবছেন চলুন নাহলে আজকে ঈশান স্যার দেরি করলে ক্লাসে ঢুকতে দেবেনা।।
মিলির কথায় কলির ধ্যান ভাঙে,,,,,,,
হম্ম চল অনেক দেরি হয়ে গেল।।
সমাপ্তি (Conclusion):
গল্পের সমাপ্তি হবে কলির নিজের মনের গভীরে ঢুকে সত্যিকারের ভালোবাসা ও দায়িত্বকে খুঁজে বের করার মধ্যে। কে পাবে কলির হৃদয়—ইভান না ঈশান?
FAQ
প্রশ্ন ১:
ইভানের আচরণে এত পরিবর্তন কেন?
- ইভানের হৃদয় কি সত্যিই কলির জন্য দুর্বল হয়ে পড়ছে? নাকি এর পেছনে অন্য কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে?
প্রশ্ন ২:
কলি কি ইভানের অনুভূতিগুলি বুঝতে পারবে?
- ইভানকে এড়িয়ে চলা কি কলির ইচ্ছাকৃত? নাকি তার নিজের মনের অজানা দ্বিধা?
প্রশ্ন ৩:
মিলি কি কলিকে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নেবে?
- ঈশান স্যার এবং ইভানের মধ্যে কে কলির জীবনে সত্যিকারের স্থান পাবেন?
প্রশ্ন ৪:
ইভান এবং ঈশানের মুখোমুখি সংঘর্ষ কি ঘটতে চলেছে?
- দুই পুরুষের আবেগ কি কলির জীবনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে? নাকি একটি চমকপ্রদ সমাধান আসবে?
প্রশ্ন ৫:
কলির পরিবারের অজানা সত্য কি এই গল্পের মোড় ঘোরাবে?
- ইভান এবং কলির জীবনের টানাপোড়েন কি তাদের অতীতের কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত?
প্রশ্ন ৬:
গল্পের পরবর্তী অধ্যায়গুলোতে নতুন চ্যালেঞ্জ আসতে চলেছে?
- দায়িত্ববোধ এবং ভালোবাসার মধ্যে কোনটি বেছে নেবে কলি?
SEO কীওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত:
- পরবর্তী পর্বের প্রশ্ন
- বাংলা রোমান্টিক গল্প FAQ
- গল্পের মোড়
- প্রেম ও দ্বিধার গল্প
- ভালোবাসার রহস্য
Thanks for your feedback