Bondini - Session 1 । Episode - 1 । New Bengali Story 2024
আকস্মিক ক্ষমতা লাভ, ও তা নিয়ে পুরনো সম্পর্কের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষকে ঘিরে। সন্দেহ ও বিশ্বাসঘাতকতার মাঝে দাঁড়িয়ে মীরা
বন্দিনী পর্ব - ১২ এই লাভ স্টোরির কি হলো ??
কংগ্রাজুলেশন মিস রায়,,,,,,,,,,,,,,, ক্যান্টিনের দিকে যেতে গিয়ে কারোর গলায় নিজের নাম শুনে থমকে দাঁড়ায় মীরা। পিছন ঘুরে দেখে ডক্টর আকাশ তার দিকেই এগিয়ে আসছে।
,
কংগ্রাজুলেশন,,,,,,আবার কথাটা বললো ডক্টর সেন।
,
কিছু না বুঝতে পেরে অবাক হয়েই তাকিয়ে রইলো মীরা।
কিসের জন্য বলুনতো।
,
আরে,,,এই যে এখন থেকে এই হসপিটালের ওনার বলে কথা। কিছুটা বিদ্রুপ ভাবেই বললো কথাগুলো আকাশ।
,
ডক্টর আকাশের কথা শুনে মাথাটা দপ করে জ্বলে ওঠে মীরার কিন্তু নিজেকে শান্ত রেখেই বললো,,,,,,,,, প্রথমতো আমি এই বিষয়ে কিছুই জানতামনা। তাই আমাকে যে কারণে আপনি কথা শোনাচ্ছেন সেটা ভুল।
,
ওহ তাইইইই,,,,,তাহলে আমার জবটা কি জন্য চলে গেলো সেটা এক্সপ্লেইন করুন। কারণ আমি যতদূর বুঝলাম আমি আপনার সাথে নিছক বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছিলাম।বুঝতে পারিনি আপনার সেটা খারাপ লাগবে।আর এতটাই খারাপ লাগবে যে আমাকে সোজা এই হসপিটাল থেকেই বাদ দিয়ে দেবেন।
কেনো মিস রায় কারোর সাথে বন্ধুত্ব করাটা কি অপরাধের। যদি হয় তাহলে সেটা আমাকে মুখেই বলে দিতে পারতেন আমি নাহয় বন্ধুত্বের হাত বাড়াতামনা কোনোদিন।
আর সবচেয়ে আশ্চর্য্য হলাম এইটা জেনে যে মেয়ে সকালবেলায় মায়ের অপারেশনের জন্য আমার কাছে একমাস সময় নিলেন ,,তাহলে কিছুক্ষন বাদে এমন কি হলো যে গোটা হসপিটালটাই আপনার নামে হয়ে গেলো। আর সেখান থেকে ম্যানেজমেন্ট আমাকে আপনার মায়ের চিকিৎসা থেকে সরিয়ে সরাসরি ডক্টর রামানুজের আন্ডারে করে দিলো।যেখানে ওই মানুষটার দেখা পাওয়াও দুর্লভ সেখানে তিনি স্বয়ং এখানে এসে আপনার মায়ের সবকিছু দেখভাল করছে।
মিস মীরা এবার বলুনতো হঠাৎ করেই কি আপনি আলাদিনের চিরাগ পেয়ে গেলেন নাকি যার জন্য এইসব এতো তাড়াতাড়ি হয়ে গেলো।
নাকি এমন মানুষের সানিধ্যে পেয়েছেন যার বন্ধুত্ব আমার থেকেও দামি,এতটাই দামি যে মিহিরের থেকে টাকা অবধি আপনি যেখানে নিতে চাননি সেখানে সেই মানুষটার সব কিছুই গ্রহণ করছেন।
,
এনাফফফফ ডক্টর সেন। রাগে গর্জে ওঠে মীরা।আকাশের বলা প্রত্যেকটা কথা কতটা নিকৃষ্ট সেটা শুনলেই বোঝা যায়।
আর ডক্টর সেনের কোনো রাইট নেই ওকে এই ভাবে বলার।
মিস্টার সেন ,,,,,,,আমি চুপ করে আছি বলে ভাববেননা আমি দুর্বল। আমি চুপ করে আছি কারণ কথাগুলো সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার ।তাই আমি আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে বাইরের কারোর কাছে কোনো কৈফিয়ত দেবোনা।
দ্বিতীয়ত,,,,, আমি যায়নি আপনার সাথে বন্ধুত্ব করতে যেচে,,,আপনি এসেছিলেন। আর আমি আপনাকে বলেয়েছিলাম আমি বন্ধুত্বে বিশ্বাসী নই। আমি তো প্রথম থেকেই আপনাকে রিজেক্ট করে গেছি তাহলে আলাদা ভাবে আপনার সাথে বদলা নেবার অন্তত কোনো রুচি আমার নেই।
আর তৃতীয়ত,,,,,,,, আমার জীবনে এই হঠাৎ বদলের জন্য শুধু আপনি নন আমি নিজেও কিছুটা অবাক।কিন্তু আপনি যে কুরুচিপূর্ণ ইশারা দিচ্ছেন আর যার বিষয়ে দিচ্ছেন তার পরিচয় পেলে আমার মনে হয়না আপনার মুখে এইসব বড়ো বড়ো কথা বেরোবে।
কিন্তু আমি এই বিষয়ে আপনার সাথে কোনো কথাই বলতে চাইনা। দেখুন আপনার জব এর জন্য আমার কোনো হাত নেই।আমি হয়তো এই হসপিটালের ওনার হতে পারি তবে আমার ওপরেও একজন আছেন।মেবি উনিই কিছু করেছেন।ভালো হয় আপনি সব খোঁজ নিয়ে তারপর নাহয় কথা বলুন।
আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে আমি যাচ্ছি।
,
কিন্তু কে সেই ব্যক্তি যার জন্য আমার জব চলে গেলো।মিস মীরা আপনাকেই সব বলতে হবে।আপনি বলতে বাধ্য।
,
না আমি বাধ্য নই ডক্টর সেন। আমি এতক্ষন আপনার অনেক বাজে কথা শুনেছি।আমার মায়ের লাঞ্চের দেরি হয়ে যাচ্ছে।তাই আমি আর একটা কথাও বলতে বাধ্য নই।যদি আপনার কিছু জানার থাকে তবে আপনি সুপারের রুমে যান।
,
,
আরে এই ডক্টরকে নাহয় বারণ করে দিলে ,,,কিন্তু আমাকে কি বলবে মীরা ডার্লিং।,
,
যেতে গিয়েও একটা চেনা কণ্ঠস্বর শুনে পা আটকে যায় মীরার। রাগে চোখ বন্ধ করে ফেলে ও। সাহিলল,,,,
,
ইয়েস ডার্লিং সাহিল,,,,,,,তোমার ফিয়ন্সে সাহিল।
,
জাস্ট সাট আপ সাহিল। আর তুমি এই হসপিটালে কেন।
,
ও মা আমি এই হসপিটালে কেন আসবোনা।যেখানে আমার হবু শাশুড়িমা ভর্তি হয়ে আছে সেখানে যে আমাকে আসতেই হত।
,
হবুউউ,,,শাশুড়িমা,,,,,,, কার তোমার? হাহা নাটকটা বেশ ভালোই পারো তুমি। এটা মানতেই হবে।
বাই দ্য ওয়ে,,,,, তোমার পার্টনারটা কই।
,
ভ্রু কুঁচকে সাহিল বললো,,,,পার্টনার? সেটা কে।
,
আরে ভুলে গেলে এতো তাড়াতাড়ি।এটা কিন্তু আমি একসেপ্ট করিনি তোমার থেকে।
,
এই ঘুরিয়ে না বলে বলো কার কথা বলছো।
,
কেনো আমি তৃণা আর মিস্টার মৈনাকের রাজপূতের কথা বলছি।
,
চমকে উঠে,,,,মানে,,,এএএ। কি বলতে চাইছো।ওরা আবার আমার কবে পার্টনার হলো আর কিসের পার্টনার।
,
মীরা সাহিলকে মাথা থেকে পা অবধি মেপে নিয়ে বললো,,,,,,,,, উমমমমম পার্টনার হলো এই যে তুমি আমাকে বিয়ে করলে আমার নামে মিস্টার রাজপূত যে সম্পত্তির অংশ লিখে দিয়েছেন সেটা পাবে।আর কি পার্টনার,,,,,,, আর এই সম্পত্তির বদলে আমার থেকে বোন ম্যারো ট্রান্সফার করে দেবে ওনাকে।আর তারপর আমাকে ডিভোর্স দিয়ে আমার নামের পুরো সম্পত্তি তোমার হবে।আর তারপর তুমি তৃণাকে বিয়ে করে নেবে।
ওয়াওওওওও গ্রেট হা,,,,,মানতেই হবে তোমার বুদ্ধি অনেক। বাট কি জানো ওই যে ওপরে যিনি আছেন তিনি কিন্তু সব কিছু দেখছেন আর হিসেব তুলে রাখছেন।আর তাইতো উনি তোমার হিসেবটাও আমার চোখের সামনে এনে দিলো।
ভাগ্গিশ কালকে আমি তোমাকে আর তৃণাকে একসাথে দেখেছিলাম।আর তাইতো সব কিছুই জলের মত পরিষ্কার হয়ে গেলো আমার কাছে।
,
কি যাতা বলছো মীরা,,,,,,আর তোমার কাছে কি প্রমান আছে যে আমি আর মৈনাক আংকেল এইগুলো করেছি। আর তুমি যে এইসব বলছো তাহলে তুমি রাতারাতি আন্টির অপারেশনের জন্য এতগুলো টাকা আর এই হসপিটালের ওনার কি করে হয়ে গেলে।
যতদূর আমি জানি মিহিরদার থেকে তো হেল্প নাওনি।তাহলে কি ধরে নেবো ভিতরে ভিতরে তুমি নিজের বাবার সাথে হাত মিলিয়েছো।আর তাই আমাকে বাদ দিয়ে সব কিছু নিজের নামে করেছো। আমাকে আর তৃণাকে জুড়ে এনগেজমেন্ট ভেঙে দেওয়াটা জাস্ট আই ওয়াশ রাইট বেবি।
,
ওহ স্টপিড সাহিল তুমি কি সবাইকে নিজের মতো সেলফিস আর মতলবি ভাবো নাকি?
আমি আগেও বলেছি আর এখনও বলছি এটা সন্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার তাই আমি কাউকেই এটার জবাব দিতে ইচ্ছুক নই। আর রইলো এনগেজমেন্ট ভাঙার,,,,সেটা আমি অলরেডি তোমার মাকে বলে দিয়েছি।আর হ্যাঁ ওয়েট বলেই জিন্সের প্যান্ট থেকে একটা আংটি বার করে মীরা সাহিলের সামনে আসলো।
তারপর ওর একটা হাত ধরে ওই আংটিটা ওর হাতের মধ্যে ধরিয়ে বললো,,,,,,,, ইউ নো সাহিল তৃণার প্রথম থেকেই এই রিংটা খুব পছন্দের ছিলো।তবে আমি এটা ভাবিনি শুধু রিং না তার সাথে যে রিং পড়িয়েছে তাকেও পছন্দ ছিলো।আর সেটা এতটাই পছন্দের যে নিজের বেস্ট ফ্রেন্ডকে ধোঁকা দিতেও ওর বুক কাঁপলোনা।
তোমাকে আজকে একটা কথা বলছি ইভেন এই যে ডক্টর সেন আপনাকেও বলছি দুজনেই কান খুলে শুনে রাখুন। আমি আমার মায়ের অপারেশনের টাকা কথা থেকে যোগার করেছি বা এই হসপিটালের ওনার কি করে হলাম সেটা আপনাদের দুজনের কাউকেই বেশি না ভাবলেও চলবে। কারণ বেশি ভাবলে যে শরীর খারাপ করে সেটা ডক্টর সেন খুব ভালো করেই জানেন। আর আমি আগেও বলেছি আর আজ কেও বলছি আনফরচুনাটলি মিস্টার রাজপূত আমার বায়োলজিক্যাল ফাদার হলেও আমি জীবনে কখনও ওনাকে আমার বাবা হিসেবে মানিনি আর আগেও মানবোনা।আর ঠিক সেই জন্য আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি ওনাকে বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেও হেল্প করবোনা। ওনার যখন ষড়যন্ত্র করার মতো এনার্জি আছে,,তাহলে নিজের ভালোটা করার মতো বুদ্ধিও ও বোন ম্যারো উনি যোগার করে নিতে পারবেন।
আমি ওনাকে এবং ওনার সাথে যুক্ত যারা যারা আছেন তাদেরকে ঘৃণা করি। আর আমার এই ঘৃণার পরিমানটা এতটাই যে ওনার সম্পত্তি তো দূর কি বাত ওনার ছায়াটাও নিজের জীবনে চাইনা।
তাই নেক্সটবার আমাকে কিছু বলার আগে ভেবেছিনে বলবে তোমরা দুজনেই।
আশাকরি আর কিছু বলার নেই তোমাদের।যদিওবা আমার কিছু শোনার ইচ্ছে নেই তোমাদের থেকে তাই প্লিজ লিভ।
,
সাহিল আর আকাশ দুজনেই অবাক হয়ে মীরাকে দেখে যাচ্ছিলো।
,
সাহিল :- এটাকি সেই মীরা যে সব সময় আমার পিছনে চুপ করে থাকতো।যা বলতাম সবটাই মেনে নিতো। এতো কনফিডেন্স মীরা পাচ্ছে কোথা থেকে। এই তেজ এই রূপ আগে কেন আমার চোখে পরেনি। মোহগ্রস্ত হয়ে তাকিয়ে রইলো সাহিল।
,
আকাশ:-- সামনের এই মেয়েটাকেই কি আমি ভালোবেসেছিলাম। এতটা বদল কি করে হয়ে গেলো মেয়েটার। আমি যে মীরাকে চিনি সে তো এ নয়।আমার মীরা ছিলো শান্ত দীঘির মতো।এতটা স্রোত তো তার ছিলোনা। নাকি এর পিছনে কারোর হাত আছে। না না না আমাকে জানতেই হবে কে আছে এই সবের।আমি আমার মীরাকে হারাতে দেবোনা আমার জীবন থেকে। একদিকে শান্তি এই সাহিল বলে ছেলেটার সাথে মীরা নিজেই সম্পর্ক ভেঙে দিয়েছে।তাই আর আমি রিস্ক নেবোনা।নিজের মনের কথাটা আজকেই বলে দেব মীরাকে।
,
,
আর ইউ ওকে রু,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,, গমগমে হাস্কি গম্ভীর গলার আওয়াজ ভেসে এলো।
Thanks for your feedback