একটি রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প: ইভান ও কলির পথচলা
বাংলা রোমান্টিক গল্প যা আপনাকে মুগ্ধ করবে এবং ভালোবাসার প্রকৃত অর্থ অনুভব করতে সাহায্য করবে।
ভালোবাসার গল্পে সব সময়ই এক ভিন্ন জাদু থাকে, যা পাঠকদের হৃদয়ে বিশেষ অনুভূতির সৃষ্টি করে। ইভান ও কলির মিষ্টি মুহূর্তগুলি ঠিক তেমনই এক আবেগঘন যাত্রা যেখানে বন্ধুত্ব, ভালোবাসা আর সম্পর্কের গভীরতা ধরা পড়ে। তাহলে এই মধুর সম্পর্কের মোড় ঘুরবে কিভাবে?
পরিচিতি
কলি, সরল এবং মিষ্টি স্বভাবের মেয়ে, যার জীবন গড়ে উঠেছে তার পরিবার এবং প্রিয় বন্ধুদের নিয়ে। অন্যদিকে ইভান চ্যাটার্জী একজন ধনী ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, কিন্তু অন্তরে তিনি খুব মানবিক। তাদের এই অসম বন্ধুত্বের শুরু হয়েছিল এক আকস্মিক ঘটনায়। জানতে পুরো পর্বটা পড়ুন
Sedin Choitro Mash
Episode 7
হসপিটাল থেকে ভাইকে নিয়ে যখন বেরোল কলি তখন রাত 10 টা বেজে গেছে ,,ও আগেই ফোনে মিলিকে সব বলে রেখেছিলো।।।মিলির বাড়িতে ওর মা গীতাদেবী হলেন মিতা দেবীর ছোটবেলার বান্ধবী।।নিজেরা যেমন ছোট থেকে বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলো ওদের মেয়েরাও তেমনই বেস্ট ফ্রেন্ড হয়েছে,,,তাই নিজের এই বিপদে তিনি তার বান্ধবীর দুই সন্তানকে বুকে টেনে নিলেন।।
- মিলিরা দুই ভাইবোন মিলি ও তার দাদা মিহির।।মিলির ভালো নাম মৃত্তিকা বোস।।ওর বাবার নাম অরুন বোস উনি কাজের জন্য বাইরে থাকেন,,তবে উনি খুব ভালো আর হাসি খুশি মানুষ।।ছেলে মেয়েরা ওনার প্রাণ,,আর সবথেকে বেশি উনি মিলিকেই ভালোবাসেন।।তাই নিয়ে দাদার সাথে খুনসুটি করতে ছাড়ে না মিলি।।।
- ****গাড়িতে বসার পর থেকে একটা কথাও ইভান বলেনি,,,আসলে ওর কলিকে মিলীদের বাড়িতে যাওয়াটা পছন্দ হয়নি।।কিন্তু কিছু করারও নেই কারণ কলি ওকে জাস্ট আজকেই দেখলো আর ও ওর কাছে সম্পুর্ন অচেনা মানুষ।।আর মিলি ওর মায়ের বান্ধবীর মেয়ে।।মিলিকেই যে ও বেশি ভরসা করবে সেটাই তো কথা.... নাহ।।
- **মিস ব্যানার্জী,,,,,ইভান কলির দিকে একটা কার্ড বাড়িয়ে দিয়ে বললো,,,,,এখানে আমার পার্সোনাল ফোন নাম্বার দেওয়া আছে,,,,যদি কিছু প্রবলেম হয় তবে অবশ্যই বিনা সংকোচে আমাকে ফোন করবেন।।
কলি ইভানের হাত থেকে কার্ড টা নিয়ে বললো আপনাকে কি বলে ধন্যবাদ দেব জানিনা,,তবে আজকে যদি আপনি ঠিক সময়ে আমার মাকে হসপিটালে না নিয়ে যেতেন তবে জানিনা কি হত বলেই আবার ওর গাল গড়িয়ে জল পড়তে লাগলো।।
ওর চোখের জল দেখে ইভানের মনটা চিনচিন করে উঠলো।।ও মুখটা ঘুরিয়ে নিজের পকেট থেকে রুমাল বার করে ওর দিকে দিলো,,,প্লিজ আপনি কাঁদবেননা আপনার মা এখন ভালো আছে ,,ডক্টর বললো তো এখন ওনার আর কোনো বিপদ নেই,,হ্যা কিছুদিন ওনাকে ওখানেই রাখতে হবে কারণ এতবড়ো একটা অপারেশন হয়েছে ওনার।।কিছু টেস্ট আর একটু ভালো রকম অবজার্ভেশনে থাকলেই দেখবেন উনি আগের মতোই সুস্থ হয়ে যাবেন।।
- কলি এক ভাবেই ইভানের কথা শুনছিলো আর মনে মনে ভাবছিলো এমন মানুষ ও আছে পৃথিবীতে যে বিনা স্বার্থে মানুষের এমন উপকার করে।।।তারপর ও ইভানকে ডাকলো,,,,মিস্টার চ্যাটার্জী,,,,,,,,আমাকে মিস্টার চ্যাটার্জী নয় ইভান বলে ডাকতে পারেন।।কারণ আমি মনে হয়না খুব একটা বেশি বড়ো হবো আপনার থেকে।।।
- কলি মৃদু হেসে বললো আচ্ছা বেশ তবে আপনিও আমাকে কলি বলে ডাকবেন,,,আসলে আমার কাছের মানুষেরা আমাকে এই নামেই ডাকে।।।
- কলির কথা শুনে ইভান দুস্টু হাসি হেসে ওর একটু কাছে এসে বলে,,,,,,আমি আপনার কাছের লোক বুঝি? বলেই সরে যায়।।
ইভানের এইরকম ভাবে কথা বলায় কলি অবাক সাথে লজ্জাও পায়,,,কিন্তু সে বলে, আসলে কি জানেন ইভানবাবু আমাদের মতো গরিব মানুষদের সাথে লোকেরা সম্পর্ক রাখতে চায়না।।পাচ্ছে আমরা যদি তাদের থেকে সাহায্য চাই এই ভয়ে।।আমাদের নিজের বলতে আমার ভাই,আমার মা আর মিলীদের পরিবার।।আর এখন আপনি ও হলেন কারণ আপনি আমাদের অচেনা হয়েও যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছেন সেটা আমার নিজের লোকেরাও করবেনা।।তাই হ্যা যদি বলেন আপনি আমার কে তবে সত্যি আপনি আমাদের পরম বন্ধু।।।
ইভান মুগ্ধ হয়ে কলির কথা শুনছিলো আর মনে মনে ভাবছিল জানিনা তোমার মধ্যে কি এমন আছে যার জন্য আমি তোমার দিকে আরও টান অনুভব করছি।।
হঠাৎ করে ইভান বাবা বলে রফিক চাচার ডাক শুনে তারা দুজনেই ফিরে তাকায় এবং দেখতে পায় যে মিলির বাড়ি এসে গেছে।
- এদিকে গাড়ির আওয়াজ পেতেই মিলি ছুটে বাইরে বেরিয়ে আসে আর সাথে আসে মিলির দাদা মিহির ও।।।
- ইভানবাবু আমরা এসে গেছি,,,আর সব কিছুর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ,,,,,,
- প্লিজ কলি বার বার এক কথা বলবেননা ।।একটা মানুষ হয়ে আরেকটা মানুষকে হেল্প করেছি ব্যাস।।
- কলি আর কিছু না বলে ঘুমন্ত ভাইকে কোলে নেবার জন্য তুলতেই ইভান ওকে বাধা দেয়।।
- আপনি নামুন আমি চ্যাম্পকে নামাচ্ছি।।
- এমা না না আপনি কেনো কষ্ট করবেন আমিই,,,,ওকে আর কিছু না বলতে দিয়েই ইভান সায়ন কে নিয়ে গাড়ি থেকে নামলো।।
- নিজেকে দেখেছেন একবারও,,,,,সকাল থেকে খাওয়া নেই তারপর এতটা ধকল গেছে,,,এমনিতেই ফুঁ দিলে উড়ে যাবেন ,,নিজেকেই সামলাতে পারেন না আবার উনি আরেক জনকে কোলে নেবে।।
- ইভানের কথা শুনে ছোট ছোট চোখ করে দেখলো কলি,,,,,কি !,,,,,,কি এমন করে দেখছেন ঠিকই বলেছি।।
তারপর দুজনেই হেসে ফেলে।।
ইভান দেখে হাসলে কলির গালে টোল পড়ে,,,তাতে ওকে আরও সুন্দর লাগে।।আর কলি দেখে ইভান হাসলে ওর বাঁদিকের গজ দাঁত দেখা যায় ,,তাতে ওকে আরও হ্যান্ডসম লাগে।।কোনো ছেলেকে হাসলে এতটা আকর্ষিত লাগে সেটা ইভানকে কাছ থেকে না দেখলে ও জানতো না।।
দুজনেই যখন দুজনেতে বিভোর ছিল তখন মিলির আওয়াজে ওদের ধ্যান ভাঙে।।।
কলিইইই বলেই ও জড়িয়ে ধরে কলিকে আর কাঁদতে কাঁদতে বলে সরি বাবু আমি তখন নোট নিতে লাইব্রেরিতে ছিলাম আমি জানতেই পারিনি মনির সাথে এত কিছু হয় গেছে,,,তুই প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দে।।
- আরে চুপ চুপ কাঁদছিস কেন বোকা মেয়ে আমি কিছু মনে করিনি,,আসলে আমি তো নিজেই জানতামনা মায়ের সাথে এইসব হয়েছে।।থাক্সস টু মিস্টার চ্যাটার্জী কে উনি যদি ঠিক সময় না আসতেন আর হসপিটালে না নিয়ে যেতেন তবে জানিনা কি হত,,,,বলেই ও ইভানের দিকে তাকালো।।
- কলি দেখলো ইভান কারোর দিকে তাকিয়ে আছে।।
- ও ইভানের দৃষ্টি অনুসরণ করে দেখলো ও মিহিরের দিকে তাকিয়ে আছে।।
- যা বাবাহ মিহিরদাকে উনি এই ভাবে কেন দেখছেন?
- আর মিহিরদাই বা কেন মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছেন? কিছু বুঝতে পারছিনা।।।ও কৌতুক দৃষ্টিতে ইভানের দিকে দেখলে শুনতে পায়,,,,,,স্যার আপনি এখানে মানে কলির সাথে?
- মিহিরের ক্থা শুনেই ওখানে কলি আর মিলি দুজনেই একসাথে বলে উঠলো,,,,স্যার?
গল্পের টার্নিং পয়েন্ট (Turning Point)
মিহির জানায় যে ইভান হলেন দ্যা চ্যাটার্জী গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রির একমাত্র মালিক। কলি হতবাক হয়ে ভাবে, এত বড় একজন মানুষ এত সাধারণ হয়ে তার পাশে দাঁড়িয়েছে।
মিহিরের পুরো কথা টা শুনেই কলি আশ্চর্য্য হয়ে যায়।।ও ভাবে এত বড়ো একটা মানুষ কিন্তু তার মধ্যে এতটুকু অহংকার নেই,,,বরং আছে একটা উদার মন।।।
এদিকে মিহির ভাবছে স্যারকে কোনোদিনও কোনো মেয়ের সাথে দেখিনি।।তাছাড়া উনি কারোর সাথেই বেশি মেলা মেশা করতে পছন্দ করেন না ,,সেখানে ও কলির জন্য এতো কিছু করেছে তার ওপর ওকে নিজের গাড়িতে নিজে এসেছে ছাড়তে।।যেখানে ওনার গাড়িতে কেউ আলাও নয় এমনকি ঈশান স্যারও নয় ।।সেখানে উনি কলিকে নিয়ে এসেছেন,,,,,উমম কিছু তো একটা গন্ডগোল আছেই।।দেখতে হবে।।
- মিহিরের চিন্তার মাঝেই ইভান ওকে ডাকলো,,,,মিহির!
- ইভানের গম্ভীর ডাক শুনেই বর্তমানে ফিরলো মিহির আর তাড়াতাড়ি ওর কাছে এসে বললো ,,,,,ইয়েস স্যার বলুন।।
- **চ্যাম্প ঘুমিয়ে পরেছে ওকে নিয়ে গিয়ে সাবধানে শুইয়ে দাও।।
- **ইভানের কথা শুনে মিহির ওর কোল থেকে সায়নকে নিয়ে ভিতরে চলে গেল।।কিন্তু ওর মনে মনে চিন্তাটা থেকেই গেল।।
- ** সায়নকে যেতে দেখে মিলিও ইভানকে ভিতরে আসতে বললো,,,কিন্তু ইভান ওকে বললো অনেক রাত হয়ে গেছে আর তাছাড়া ওর বাড়িতেও সবাই ওয়েট করছে তাই আজকে আর ভিতরে যাবে না।।
- মিলি মাথা নাড়িয়ে কলিকে বললো,,,তুই কথা বলে আয় আমি মাকে বলছি খাবার বাড়তে।।বলেই ও ও ভিতরে চলে গেল।।
- ***কলি--- আপনি তো আজকে আর আসবেন না তবে মা সুস্থ হয়ে গেলে অবশ্যই একবার আমাদের বাড়ি যাবেন,,,যদিও এটা অসম্ভব কারণ আপনার মতো একজন এতো বড়ো মানুষ আমাদের মতো মানুষদের বাড়িতে পা রাখবে সেটাও স্বপ্ন আমাদের।।
কলির কথা শুনেই ইভানের মাথাটা গরম হয় যায়।।ও বলে সব সময় সব কিছু টাকা দিয়ে বিচার হয়না মিস ব্যানার্জী,,,কিছু সম্পর্ক মন থেকেও হয়।। anyway অনেক রাত হলো এই বার ভিতরে যান আর রেস্ট করুন আমি আসছি।।বলেই ও আর কোনো দিকে না দেখে গাড়িতে বসে তাড়াতাড়ি ওখান থেকে বেরিয়ে যায়।।।
হতভম্ব কলি কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থাকে আর ভাবে ,,,,,যা বাবাহ কি হলো হঠাৎ এই রকম কেন ব্যবহার করলো।।এতক্ষন ঠিকই তো ছিল।।।ও ভাবতে ভাবতেই ঘরের ভিতর চলে যায়।।।
সমাপ্তি (Conclusion) )
কলির মনে ইভানের আচরণ নিয়ে নতুন প্রশ্ন জাগে। কেন হঠাৎ এমন ব্যবহার করল ইভান? এই রহস্যের পরবর্তী অধ্যায় জানতে থাকুন এই বাংলা রোমান্টিক গল্পে। পরবর্তী পর্বে কী ঘটবে? জানতে চোখ রাখুন আমাদের ব্লগ - মনের আঙ্গিনায়
FAQ
ইভান তার আসল পরিচয় কলির কাছ থেকে কেন লুকিয়ে রেখেছে?
ইভান তার জটিল অনুভূতিগুলোর সাথে লড়াই করছে এবং ভয় পাচ্ছে যে তার সম্পদের কথা জানলে কলি হয়তো তার প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলে ফেলবে। পরবর্তী পর্বে জানুন, তার গোপনীয়তা প্রকাশ পেলে তাদের সম্পর্ক কীভাবে প্রভাবিত হবে।ইভান আর কলির সম্পর্ক নিয়ে মিহির কী সন্দেহ করছে?
ইভানের আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন লক্ষ্য করে মিহির ভাবছে, হয়তো ভালোবাসা কঠোর এই মানুষটির হৃদয়ে প্রবেশ করেছে। মিহিরের কৌতূহল কি ইভান ও কলির বন্ধনে কোনো বিপদ আনবে?ইভানের আসল status জানার পর কলির ধারণা কি বদলে যাবে?
চ্যাটার্জী গ্রুপের মালিক হিসেবে ইভানকে দেখে কলি স্তম্ভিত হয়ে যায়। সে কি এই নতুন ইমেজকে মেনে নিতে পারবে, নাকি সেই ইভানকে খুঁজে বের করবে যাকে সে চিনেছে?ইভান কলির পরিবারে কীভাবে জড়িয়ে পড়ে, আর তাদের প্রতিক্রিয়া কেমন হয়?
ইভানের status জানার পর কলির পরিবার কীভাবে তাদের সম্পর্কের পরিবর্তন দেখে? তারা কি ইভানকে গ্রহণ করবে, নাকি সমাজের কুসংস্কার আরও বাধা তৈরি করবে?মিহির এবং কলির অতীতে কি কোনো লুকানো যোগসূত্র আছে?
পরবর্তী পর্বে হয়তো এমন কিছু সত্য প্রকাশ পাবে যা মিহির ও কলির জটিল সম্পর্কের চেহারা সম্পূর্ণ বদলে দিতে পারে।
Related Posts/Links
আরও পড়ুন: সেরা বাংলা রোমান্টিক গল্পসমূহ
Bondini - Session 1
Sedin Choitro Mash - Session 1
Thanks for your feedback