Translate

Bondini Episode - 15 Bengali Sad Love Story

 Episode - 15।। New Bengali Story 2024

তিন বছর আগে একটি ভুলে বদলে গিয়েছিলো সিংঘানিয়া পরিবারের জীবন, আর সেই ক্ষত এখনো জ্বলছে রাজবীরের মনে। বিরহের এই গল্প  প্রেম আর প্রতিশোধের এই টানাপোড়েনে মীরাকে ফিরে পেতে কী পথে নামবে সে?

বন্দিনী :- পর্ব -- ১৫

 সিংঘানিয়া হাউস,,,,,,,,,  


কাজের লোকেরা সব ভয়ে একপাশে দাঁড়িয়ে আছে জড়ো হয়ে।একটা ভুল আর তারপরেই সারাজীবনের মতো কাজ থেকে ছুটি হয়ে যাবে ওদের।আর কোথাও যে ওরা কাজ পাবে না সেটা ওরা জানে।কারণ সিংঘানিয়া নামটাই একটা ত্রাস সবার কাছে।মাথা নিচু করে ভয়ে ভয়ে দাঁড়িয়ে আছে সবাই।কিন্তু গত তিন বছর আগেও এই হাউসের চেহারাটাই আলাদা ছিলো।তখন সবার মুখেই হাসি লেগে থাকতো,এমনকি এই সিংঘানিয়া পরিবারের মালিকের মুখেও। কিন্তু একটা ঝড় সব কিছু পাল্টে দিলো এক নিমিশে।

ওরা আজও মানেনা ওদের বৌরানী দোষী বলে।ঐ রকম মেয়ে যে পাথরের মধ্যেও ফুল ফোটাতে পারে সে কখনো দুশ্চরিত্রা হতে পারেনা।কখনও নয়। বৌরানী তো সবার সাথেই সুন্দর মিষ্টি ব্যবহার করতো।নিজে শত কষ্টের মধ্যে থেকেও একবারের জন্য বুঝতে দেয়নি । বাড়ির মালি থেকে ড্রাইভার সবার ভালো মন্দের দিকে চোখ রাখতো বৌরানী। তাহলে সে কি ভাবে লোভী হতে পারে।

কিন্তু আমরা কেউই মালিকের বিরুদ্ধে যেতে পারবোনা।তবে যদি সত্যিই ভগবান বলে যদি কেউ থাকে , তবে একদিন বৌরানীর ওপর সব অপবাদ মিথ্যে প্রমাণিত হবেই।আমরা সেইদিনটার জন্যই নাহয় সব কিছু সহ্য করে নেবো।

,

ডেভিডড,,,,,,,,,,, একটা গুরু গম্ভীর আওয়াজ তিনতলার রুম থেকে ভেসে আসলো। আওয়াজটা শুনেই মনে হচ্ছে খুব রেগে আছে সেই ব্যক্তি।

,

প্রেসিডেন্ট,,,,আমি তো ট্রাই করছি তিন বছর ধরে,কিন্তু ওরা যে সবাই কোথায় চলে গেলো একটাও কোনো ক্লু পাচ্ছিনা যার থ্রুতে আমরা ম্যাডামের খোঁজ পেতে পারি।

,

একটা কাঁচের ভাস মেঝেতে পরে টুকরো টুকরো হয়ে গেলো।

আমি কোনো এক্সকিউজ শুনতে চাইনা ডেভিড।আমি যেকোনো মূল্যে তাকে চাই।তুমি তাকে কোথায় পাবে,কিভাবে পাবে সেটা তোমার ব্যাপার।কিন্তু তাকে আমার চাইইইই,,,,,,,,,,,,চিৎকার করে কথাগুলো বললো সে।

,

ডেভিড মনে মনে,,,,,,,,,, হুউ এখন তাকে চেয়ে আর কি হবে। যখন সে ছিলো তার তো কোনো মূল্যই আপনি কোনোদিন দেননি প্রেসিডেন্ট। আমি আপনার সার্ভেন্ট অথচ মেয়েটা আমাকেও একটা মিষ্টি সম্পর্কে জড়িয়ে নিলো।কি মিষ্টি করে ডাকতো আমায় ডেভিড দাদাভাই বলে।শুধুমাত্র আপনার জন্য আমি আমার বোন টাকে হারিয়ে ফেললাম। আরে আমিতো অনাথ এইসব সম্পর্ক কেমন হয় জানতামই না । কিন্তু আপনি,,আপনি তো ছোট থেকেই বাবা,মা,বোন সব কিছু সম্পর্ক দেখেছেন।তারপরেও মেয়েটার ওপর এমন অত্যাচার করতে একফোঁটাও বাঁধলোনা আপনার। কতটা সহ্য করেছে মেয়েটা সব কিছু আপনার জন্য।নিজের চোখের সামনে একে একে নিজের কাছের মানুষগুলোর মৃত্যু দেখেছে,, সাথে নিজের মধ্যে যে প্রাণের অস্তিত্ব ছিলো সেটাও শেষ হতে দেখলো।এই সব কিছুর জন্য আর কেউ নয় আপনি,,আপনি দায়ী প্রেসিডেন্ট।

আমি ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি যেন এই জন্মে আর ওর সাথে আপনার দেখা না হয়। ওকে হারানোর এই যন্ত্রনাটা নিয়েই আপনাকে সারাজীবন থাকতে হবে।এটাই আপনার শাস্তি।

,

ডেভিড,,,,,,, অস্ট্রেলিয়ায় আমাদের যে প্রজেক্টটা চলছে সেটার কি খবর।

,

প্রেসিডেন্ট ওটা আগামীকাল আমাদের মিটিং আছে।আজকেই আমাদের ওখানে যেতে হবে।আমি সব ব্যবস্থা করে দিয়েছি , আর সব কিছু রেডি আছে।আপনি বললেই আমরা বেরিয়ে যাবো।

,

আমার প্রাইভেট জেট রেডি করো আমি আধঘন্টার মধ্যেই বেরোবো।

,

ওকে প্রেসিডেন্ট।

,

ঠাম্মি আসবো,,,,,,,,,,,,, 

,

তোমার এখানে কি দরকার।

,

কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর বললো,,,,,,,,,আমি এক সপ্তাহের জন্য অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছি।ওখানে আমার একটা প্রজেক্ট চলছে।আমি এখানে আশা দিদিকে আর রাজু দা কে সব কিছু বুঝিয়ে বলে যাচ্ছি।তোমার কোনো অসুবিধা হবেনা।তুমি শুধু সময় মতো খাওয়া দাওয়া আর ওষুধটা মনে করে খেয়ো। আর যদি ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছে হয়তো মনোহর কাকাকে বল।আমি আগেই বলে রেখেছি।তবুও তোমাকে জানিয়ে রাখলাম।সাবধানে থাকবে।

,

আমাকে নিয়ে তোমার এই অহেতুক ভাবনা না ভাবলেও চলবে,,,,,,,,রাজবীর।

,

গত তিনবছর ধরে ওর ঠাম্মি ওকে এই নামেই ডাকে।আগের মতো দাদুভাই বলে আর ডাকেনা আর না আগের মতো স্নেহ ভালোবাসা দেয়। ওদের এই নাতি ঠাম্মির সম্পর্কটা কেমন যেন হয়ে গেছে।

,

আমি ভাববোনাতো আর কে ভাববে তোমার কথা।যার ভাবার কথা ছিলো সে কি তোমার কথা ভেবেছে।যদি ভাবতো তাহলে কি সে তোমাকে ছেড়ে চলে যেতে পারতো?

,

রিয়েলি রাজবীর,,,,,,, এই কথাটা তুমি বলছো? সত্যিটা কি সেটা আশাকরি আমার থেকেও বেশি ভালো তুমি জানো। তাই তোমার সাথে এই বিষয়ে কথা বলতে আমার ভালো লাগছেনা।আমি আগেও নিজেকে ভালো রেখেছি আর এর পরেও নিজেকে ভালো রাখতে পারবো। গায়েত্রী সিংঘানিয়া এতটাও দুর্বল নয়।

,

আমি জানি আমি ভুল করেছি,আর সেই জন্য তিন বছর ধরে তাকে পাগলের মতো খুঁজছি।জানিনা সে কোথায় আছে, কেমন আছে। কিন্তু সে বেঁচে আছে এটা আমি জানি।যতদিন আমার শ্বাস চলছে ততদিন তারও শ্বাস চলবে। ও যে আমাকে আমার চেয়েও বেশি ভালোবাসে সেটা আমি জানি।

আমি জানি মীরাকে তুমি আমার থেকেও বেশি ভালোবাসতে।আর আমার করা অপরাধ গুলোর জন্য আমি তোমার থেকে এই ব্যবহারেরই যোগ্য। তবে আমি তোমাকে কথা দিলাম নিজের জীবনের শেষ দিন অব্দি আমি মীরাকে খুঁজতে থাকবো। 

আমার ভালোবাসা যদি সত্যি হয় তবে ওকে আমার কাছে ফিরতেই হবে ঠাম্মি ,,,,,ফিরতেই হবে।

,

ভালোবাসার কথা তোমার মুখে মানায়না রাজবীর। যে ভালোবাসার জন্য আজকে তুমি ছটফট করছো সেটা যদি তিন বছর আগে বুঝতে পারতে তবে মেয়েটাকে তার সব কিছু হারাতে হতোনা। শুধুমাত্র তোমার জন্য মেয়েটা নিজের মাকে, নিজের সন্তানকে হারিয়েছে।উফফফফ ভগবান,,,,,আমি আজও সেই দিনটা ভুলতে পারবোনা। ঠিক কতটা যন্ত্রনা,কতটা অপমান ,কতটা কষ্ট সহ্য করেছিল। আমি নিজে একটা মেয়ে জানি নিজের চরিত্রে সবার সামনে যদি কেউ প্রশ্ন তোলে সেটা কেমন হয়,,আবার যদি সেই মানুষটা তার স্বামী হয়। তবে তোমার মতো অমানুষ সেটা বুঝতে পারবে কি করে।তুমি শুধু নিজের জেদ,নিজের ইগোটাকেই প্রাধান্য দিয়ে এসেছো সবসময়।

প্লিজ রাজবীর তুমি আমার চোখের সামনে থেকে যাও।আমার তোমার উপস্থিতি সহ্য করতে পারছিনা।

,

চোখের কোনে আসা জলটাকে আঙুলের সাহায্যে মুছে নিয়ে রাজবীর বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।


মন ছুঁয়ে যাওয়া bangla প্রেমের গল্প বন্দিনী আপনাদের কেমন লাগছে comment জানান



রাজবীরকে বেরিয়ে যাওয়ার পর গায়েত্রী দেবী বললেন,,,,,,,,,,,, যে রত্ন তুমি হেলায় হারিয়েছো তাকেতো এতো সহজে তুমি আর ফিরে পাবেনা।মেয়েটাকে তুমি রক্তের কান্না কাঁদিয়েছো,,তোমাকেও এখন প্রতিটা মুহূর্তে সেটা পেতে হবে।আমি জানি তুমি আমার নাতি।তবে আমি তোমার ঠাম্মি হওয়ার আগেও একজন নারী।তাই নারীর যে অবমাননা তুমি করেছো তার ফল তোমাকে ভোগ করতেই হবে রাজবীর ,,,,,, ভোগ করতেই হবে।

,

,

প্লেনের ভিতর ল্যাপটপে মন দিয়ে কিছু দেখছিলো রাজবীর। ফোল্ডার খুলতে গিয়ে একজায়গায় হাত লেগে একটা ছবি খুলে যায়।

রাজবীর দ্যাখে এটা ওদের রিসেপশনের ছবি। একটা নীল রঙের বেনারসীর সাথে ডায়মন্ডের জুয়েলারিতে ওর সামনে কাঁধে হাত দিয়ে মুখ নামিয়ে লজ্জামাখা হাসি হাসছে। এক দৃষ্টিতে মীরার মুখের সেই হাসিটা দেখে ওর মন চলে গেলো তিন বছর আগের সেই রাতের কথা।

,

 ________ফ্ল্যাশব্যাক______  

কোলে করে নিয়ে এসে নিজের বেড রুমে দার করে মীরাকে রাজবীর।

ওর দিকে না তাকিয়েই মীরাকে বলে,,,,,,,কাবার্ডে তোমার সবকিছু আছে, অনেকরাত হলো তুমি ফ্রেশ হয়ে আজকে এখানেই রেস্ট নাও, আমি আসছি।

,

কথাটা বলেই রাজবীর ঘর থেকে বেরোতেই যাচ্ছিলো কিন্তু মীরার আওয়াজে ওকে থামতে হলো।

,

বীর,,,,,,, তুমিও তো টায়ার্ড আছো তাহলে তুমি এখন কোথায় যাচ্ছো।

,

মীরার কথা শুনে দপ করে জ্বলে উঠলো রাজবীরের চোখগুলো।কিন্তু নিজেকে শান্ত করে বললো,,,,,,হিসেব অনুযায়ী আজকে আমাদের কালরাত্রি।আর ঠাম্মি তো বললো আজকে আমরা কেউ কারোর মুখ দেখবোনা।তাই আমি আজকে স্টাডিরুমেই রাত্রিটা কাটাবো।এমনিতেই কিছুদিন আমার অনেক কাজ পেন্ডিং হয়ে আছে।

,

রাজবীরের কথা শুনে মীরা ব্যস্ত হয়ে বললো,,,,সারারাত তুমি স্টাডিরুমে কাটাবে? কেন গেস্টরুমে গিয়ে একটু রেস্ট নিতে পারতে তো। আমি জানি তোমার অনেক কাজ ,,তবুও শরীরকে রেস্ট না দিলে কাজ করবে কি করে।

,

এনাফফফফ,,,,,,,,,,, গুরু গম্ভীর আওয়াজে চেঁচিয়ে উঠলো রাজবীর।

রাজবীরের এমন হুঙ্কারে কেঁপে উঠলো মীরা।ও তো ওর ভালোর জন্যই বলেছে।তাহলে ছেলেটা হঠাৎ রেগে গেল কেন ওর ওপর এমন।

ব,,বীর,,,,,,আমি,,,,কি কিছু,,,,,,

,

মীরা অনেক রাত হয়েছে তুমি রেস্ট নাও আর প্লিজ আমাকে ডিসটার্ব করোনা।কথাটা বলেই রাজবীর দ্রুত বেরিয়ে গেল রুম থেকে।

,

আর মীরা আশ্চর্য্য হয়ে চোখে জল নিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। ও কি কিছু ভুল করলো যে রাজবীর হঠাৎ এমন রিএক্ট কেন করলো।

ধীর পায়ে আস্তে আস্তে মীরা কাবার্ডের কাছে গিয়ে ওটা খুললো, আর খুলে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো । কারণ গোটা কাবার্ডের একপাশে রাজবীরের পোশাক আর অন্যপাশে মীরার শাড়ি খুব সুন্দর ভাবে গোছানো আছে।শুধু শাড়িই নয় তার সাথে যা যা প্রয়োজন সবকিছুই আছে ।

,

এতসব বীর কখন করলো।কই আমাকে তো একবারের জন্যও বলেনি ও। তারপর ইতস্তত করে নিজের অন্তর্বাসের প্যাকেটটা হাতে নিয়ে দেখলো একদম পারফেক্ট ওর সাইজেই কেনা হয়েছে ওর জন্য।কিন্তু বীর ওর সাইজ জানলো কি ভাবে।

,

একটা রাত হলেও তোমার সাথে আমি নাইট স্পেন্ড করেছি মীরা।তাই তোমাকে জানাটা এতটাও শক্ত নয় আমার কাছে। আফটার অল রাজবীর সিংঘানিয়া এতটাও কাঁচা ব্যবসায়ী নয় যে মাপ ভুল করবে।সেটা জামা কাপড়ই হোক বা হীরের ক্যারেট।

,

রাজবীরের হঠাৎ আগমনে মীরা যেমন চমকেছিলো ঠিক তেমনি ওর কথার মানে বুঝতে পেরে ওর কান নাক গাল লজ্জায় আরক্ত হয়ে উঠলো। চুপ করে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে মীরা।

,

তোমার খাবারটা এখানে রাখলাম। আর হ্যাঁ কালকে ভাবছি আমাদের এই বিয়েটাকে পাবলিকলি এনাউন্স করবো,তো তাই একটা পার্টি রাখবো ও প্রেস কনফারেন্স।

,

পার্টি অব্দি ঠিক ছিলো কিন্তু প্রেস কনফারেন্সের কথা শুনেই মীরা ঘাবড়ে যায়। ও তাড়াতাড়ি মাথা সোজা করে তাকায় রাজবীরের দিকে।

,

আরে ডোন্ট ওয়ারি তোমাকে কিছু হ্যান্ডেল করতে হবেনা।ওটা আমি আর ডেভিড মিলে সব ঠিক করে দেব। তোমার যদি কাউকের ইনভাইট করতে হয়তো আমাকে জানিও।

,

উমম মা আর দাদাভাই ছাড়া আমার আপন বলতে আর কেউ নেই। তৃণা ছিলো বাট সেও এখন নেই। তাই এক্সট্রা করে আমি কাউকেই বলতে চাইনা।

 ,

তাহলে তুমি বরং তোমার দাদাভাইকে ইনভাইট করে দিতে পারো।দাঁতে দাঁত চেপে কথাটা বললো রাজবীর।

,

উমম না আমি বলবোনা,,,,,কারণ আমার হুট করে এমন বিয়ে হয়েছে শুনলে দাদাভাই কষ্ট পাবে।তাই আমি ফোন করবোনা।

,

আর আমি তো চাই যে তোমার দাদাভাই কষ্টটা পাক যেমনটা আমরা পেয়েছিলাম।মনে মনে কথাটা বললেও মুখে বললো,,,,,,,,,,,,তুমি এখনের কষ্টটা ভাবছো মীরা।যখন উনি কালকে নিউজে যখন সবটা জানতে পারবে তখন তো এটার থেকে বেশি কষ্ট পাবেন। তাই আমি চাইবো তুমি আজকেই সবকিছু জানিয়ে দাও।

হ্যাঁ মীরা সব বলে দাও ,,,তারপরেই না বুঝতে পারবে যে না বলে বিয়ে করে নিলে পরিবারের কষ্টটা ঠিক কতটা হয়,,মনে মনে বললো রজবীর।

,

থিক আছে আমি ফোন করছি।


,

,_____________ 


Sir would you like coffee or hard drink.

,

এক ঝটকায় অতীত থেকে বর্তমানে ফিরে পরলো রাজবীর। তখনো ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে বিমান সেবিকা টি নিজে লাস্যময়ী হাসি নিয়ে।

একটা শীতল দৃষ্টি দিয়ে তাকালো রাজবীর ওই সেবিকাটির দিকে।

,

ওর এমন হিমশীতল দৃষ্টি দেখে মুহূর্তেই ফ্যাকাসে হয়ে যায় মেয়েটির মুখের হাসি।মনের ভিতর একটা চোরা ভয়ের স্রোত নেমে যায় ওর শিরদাঁড়া দিয়ে।

,

রাজবীর তার ওই কঠিন দৃষ্টি দিয়েই পাশের সিটে বসা ডেভিড এর দিকে তাকালে ডেভিড সঙ্গে সঙ্গেই সিট থেকে উঠে দাঁড়ায়। ও বিমান সেবিকার দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,,,, মিস প্লিজ আমার সাথে একবার এদিকে আসুন।

,

মেয়েটা ডেভিড এর মতো লম্বা চওড়া আর ওর হিংস্র চাহুনি দেখে ভয়ে মুহূর্তেই ওর সাথে ওখান থেকে চলে যায়।

,

ডেভিড মনে মনে ভাবে,,,,,,,,,, আজ ৩২ বছর পর্যন্ত এমন কোনো মেয়ে নেই যে প্রেসিডেন্টের ওপর ক্রাশ খায়নি। অনেক চেষ্টা করেও এই পুরুষের মন কোনো নারীই গলাতে পারেনি। একমাত্র এক নারী ছাড়া। তার উপস্থিতিতে এই কঠোর পুরুষের জীবনে ফুল ফুটেছে। এই সেই নারী যার জন্য ওদের প্রেসিডেন্ট আজও পাগল হয়ে যান তার অনুপস্থিতিতে।তাইতো এতো কিছুর পরেও সেই নারীকে পাগলের মতো খুঁজে চলেছে তাদের প্রেসিডেন্ট। 

আর এই মেয়েটা কিনা শরীর দেখিয়ে ওনাকে বশ করতে এসেছিলো।পুওর গার্ল,,,,,,জানেওনা আজকের করা ওর এই আচরণ কতটা খারাপ হবে ওর ভবিষ্যতের জন্য। হয়তো সারাজীবনের মতো ওর কোথাও আর কোনো জব পাবেনা। বা হয়তো এরপর থেকে এই মেয়েটাকেই আর দেখা যাবেনা এই পৃথিবীতে।

ওদের প্রেসিডেন্ট যে কতটা নিষ্ঠুর সেটা ওর থেকে ভালো আর কেউ জানেনা।

,

ল্যাপটপে মীরার আর ওর সেই ছবিটা দেখতে দেখতে মনে মনে রাজবীর বললো,,,,,,,,,,, কোথায় আছো রু,,,,, তোমার কি তোমার বীরের কথা একবারের জন্যও মনে পরেনা।

তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলে,,,,,,,,,,, আমিতো পাপী,,, আমার কাছে কেনই বা আসবে তুমি। আমি তোমাকে এতটা কষ্ট দিয়েছি রু সেই জন্য আমি তোমার থেকে ক্ষমা চাইছি।কিন্তু রু তুমি আমাকে ক্ষমা করোনা তার বদলে আমাকে শাস্তি দিও কঠিন শাস্তি দিও,,,,কিন্তু প্লিজ আমার জীবনে ফিরে আসো রু,,,,,ফিরে আসো।তোমার বীর আজ নিঃস্ব তোমাকে ছাড়া। আমি হয়তো মা কে আর তোমার যাচ্ছে ফিরিয়ে দিতে পারব না কিন্তু আমাদের হারিয়ে যাওয়া সন্তানকে আমাদের মাঝে আবার ফিরিয়ে আনবো। শুধু আমার কাছে ফিরে এসো প্লিজ। ছলছল চোখে ছবিটার দিকে তাকিয়ে রইলো বীর।

,

এদিকে জল খেতে গিয়ে মীরার হঠাৎ বিষম লাগে। কাশতে কাশতে দম আটকে যাওয়ার মতো অবস্থা।

,

উফফফফ মীরা বেবি আস্তে খা।কেউ তোর জলটা নিয়ে পালিয়ে যাবেনা।

মীরার মাথায়,পিঠে হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলো ওই হসপিটালেরই ওর এক বন্ধু অলিভিয়া।

,

কিছুটা ঠিক হবার পর মীরা বললো,,,,,,,আমি ঠিক আছি অলি। আসলে আমার মনে হলো কেউ আমাকে খুব মন দিয়ে ডাকছিলো। আসলে মা মারা যাওয়ার পর আমার জন্য এই ভাবে ভাবার মতো তো কেউ নেই,,তাই হয়তো বিষম খেলাম।

,

আমরাও যে তোমার কথা ভাবতে পারি সেটা কেন ভুলে যাও তুমি। মীরা আর অলিভিয়া সেই আওয়াজটার দিকে তাকিয়ে দেখলো ওদের সামনে এগিয়ে আসছে সেই মানুষটি।



FAQ

  • মীরার জীবনের তীব্র ট্র্যাজেডি শুরু হলো কিভাবে?
  • মীরার জন্মদিনে একটি মিথ্যা অভিযোগ তাকে প্রচণ্ড কষ্ট দেয়। তার মা অপমানিত হন, যা মীরার জীবনে গভীর ক্ষত তৈরি করে। জীবনের এই গল্প এ শেষ প্রজন্ত কি হবে মীরার 
  • রাজবীর কেন মীরার খোঁজে পাগলপ্রায় হয়ে উঠেছে? 

    • এই সম্পর্কের গল্প এ  তিন বছর ধরে রাজবীর মীরার জন্য পাগলের মতো খুঁজছে, যদিও সে নিজেই মীরার জীবনকে দুর্বিষহ করেছিল। এখন তার ভুল বোঝার জন্য নিজেকে শাস্তি দিতে প্রস্তুত।  
  • গায়েত্রী দেবীর মনোভাব কি রাজবীরের প্রতি?

    • এই  পারিবারিক গল্প গায়েত্রী দেবী বিশ্বাস করেন, মীরার জীবনে রাজবীর ছিলো সর্বনাশের কারণ, এবং এখন রাজবীরকেই তার অন্যায়ের শাস্তি ভোগ করতে হবে।   
  • ডেভিডের চরিত্রটি কেন গুরুত্বপূর্ণ? 

    • এই বাংলা প্রেমের গল্প এ ডেভিড মীরার সাথে খুব ঘনিষ্ঠ ছিল এবং সে রাজবীরের প্রতি প্রচণ্ড রাগ পুষে রেখেছে। তার দৃষ্টিকোণ থেকে রাজবীর সিংঘানিয়ার নিষ্ঠুরতা ফুটে উঠেছে।   
  • অলিভিয়া এবং মীরার বন্ধুত্ব কেমন? বন্ধু হবে নাকি শত্রু ?

    • মীরার জীবনে মা এবং পরিবারের অভাব পূরণ করতে অলিভিয়া তার পাশে থাকে। সে মীরার সুখ-দুঃখের সঙ্গী এবং মীরার মানসিক সমর্থনের এক নির্ভরযোগ্য বন্ধু। 

বন্দিনীর সকল পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন  -  বন্দিনী ভালোবাসার বাংলা গল্প




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
Sedin Choitro Mash-Episode-10-Valobashar-Golpo-2025

Sedin Choitro Mash-Episode-10-Valobashar-Golpo-2025