ভালোবাসার মোড়ে দাঁড়িয়ে দায়িত্ব
ত্যাগ এবং অনুভবের এক মেলবন্ধন
ইভানের দৃষ্টি স্থির হয়ে গেল কলির চোখে; যেন তার দুঃখ মুছে দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করল কোনো এক অজানা অনুভূতি। কিন্তু এ কি শুধুই দায়িত্ব, না কি ভালোবাসার এক শুরুর গল্প?"
কলি, সরল এবং মিষ্টি স্বভাবের মেয়ে, যার জীবন গড়ে উঠেছে তার পরিবার এবং প্রিয় বন্ধুদের নিয়ে। অন্যদিকে ইভান চ্যাটার্জী একজন ধনী ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, কিন্তু অন্তরে তিনি খুব মানবিক, কলির সঙ্গে রাস্তায় দেখা হওয়া তাকে অস্থির করে তোলে
রেডি হয়ে যখন ইভান নিচে নামলো তখন আশাদেবী ওদের জন্য ব্রেকফাস্ট বানাচ্ছে।।ইভানকে দেখে উনি বললো হ্যাঁরে তুই এত সকালে অফিসে কেন যাচ্ছিস বাবিন,,সবে তো কালকেই এলি।আজকের দিনটা রেস্ট নিলে হতোনা।।
ইভান ওর জেম্মাকে পিছন থেকে জড়িয়ে বললো,,,অনেক কাজ আছে জেম্মা তাছাড়া একবার হসপিটালেও যাবো ওনাকে দেখতে আর ডাক্তারের সাথে কথা বলতে।।
পেটে না ধরলেও নিজের জায়ের এই সন্তানকে উনি খুব ভালো বোঝেন।।কে বলেছে যে মা হলেই সবাই বোঝে সন্তান কি চায় না চায়।উনি তো ইভানের মা নন তবুও উনি এই মুখচোরা ছেলেটাকে জানেন চেনেন।।অন্যের বিষয় তাকে কোনোদিনও বেশি মাথা ঘামাতে দেখেনি,,বিশেষত সেটা যদি আবার বাইরের লোক হয় তো আরোই নয়।।তবে এইবারে এমন কি হলো যে এই মুখচোরা ছেলে নিজেকে এতটা ইনভল্ব করছে এই বিষয়ে।।ছেলের মনকে আর একটু বোঝার জন্য উনি বললেন,,,,"বাবিন ওনার বাড়ির লোকেরা জানেনা ওনার এই অবস্থার কথা।যদি না জানে তবে তুই ওদের বাড়িতে খবর পাঠাবার ব্যবস্থা করে দে"।
জেম্মার কথা শুনে ইভানের কালকে কলির কান্নারত মুখটা মনে পড়লো।কেমন পাগলের মতো ছুটে এসেছিল হসপিটালে ফোনটা পেয়েই।আর তারপর থেকে মায়ের অপারেশন হওয়া আর মায়ের জ্ঞান না ফেরার জন্য কেঁদে কেঁদে পাগলিটা অস্থির হয়ে গেছিলো।।ইভানের ওর সাথে সব কথা ওকে নিজের আপনজন ভাবার কথাটাও ওর মনে পড়লো।।আর মনে পড়তেই নিজের অজান্তেই ওর ঠোঁটে হালকা হাসির রেখা ফুটে উঠলো।।কিন্তু তারপরেই ওর লাস্টের কথাগুলোও মনে পরলো ।মনে পড়তেই আবার মুখটা ওর কঠিন হয় গেল।।
- ছেলের মুখের প্রতিটা ভাব খুব ভালো করে দেখছিলেন আশাদেবী।।ইভানের কোনো জবাব না পেয়ে ওকে আবার বললেন,,,,কিরে তুই কি জানিয়েছিস ওদের বাড়ির লোকেদের?
- জেম্মার কথা শুনে ইভান ভাবনা ছেড়ে বাস্তবে নেমে এলো।।"আসলে জেম্মা ওনার একটা মেয়ে ও একটা ছেলে ছাড়া এই পৃথিবীতে আর কেউ নেই।"
- 3বছর আগেই ওদের বাবা ওদেরকে ছেড়ে চলে যান।আর ওদের যাতে দায়ভার নিতে না হয় টাই ওদের সাথে কোনো আত্মীয় কোনোরকমের সম্পর্ক রাখেননি।।বলতে পারো মা ছাড়া ওদের আর কেউই নেই।।বলতে বলতে ইভানের নিজেরও চোখের জল চিক চিক করে উঠলো।
- আর তাই তো আমি ওদেরকে এই বিপদে একা ছেড়ে দিতে পারিনি।।আমি জানতাম ওদের অত বড়ো অপারেশনের খরচ বহন করার সামর্থ নেই,,আর তার ফলে বিনা চিকিৎসায়ে উনি মারা যেতে পারতেন।।আমি তো জানি মা বাবা না থাকলে ঠিক কেমন লাগে।তবে হ্যা আমি ওদের থেকে লাকি যে আমার মা বাবা না থাকলেও আমার তোমার মতো আরেক মা ও জেঠুনের মতো আরেক বাবা আছে।।কিন্তু ওদের যে মা ছাড়া আর কেউ নেই।।
ছেলেকে এতটা কষ্ট পেতে দেখে আশাদেবী ইভানকে জড়িয়ে ধরলেন।।মনে মনে বললেন,,,আমি জানি যতই ভালোবাসা দিই না কেন কেউ মনে হয় মা বাবার জায়গা নিতে পারবেনা কোনোদিনও।।তিনিও চোখের জল মুছে ইভানকে বললেন,,,যা বোস আজকে তোর পছন্দের জলখাবার বানিয়েছি,,,লুচি আর আলুরদম সাথে সিমুইয়ের পায়েস।।কত্তদিন তোকে এই ভাবে পাশে বসিয়ে খাওয়াইনি বলতো।।
ইভানও নিজের পছন্দের খাবার শুনে বললো,,,,উফফ জেম্মা i just love u।।।তুমি কি করে বুঝলে বলতো আমার এটাই খেতে ইচ্ছে করছিলো।।
আশাদেবী ওর গালে হাত দিয়ে ওকে বললো,,ঠিক যেমন এখন তোর মনে কাউকে জায়গা করে দিয়েছিস অথচ নিজেই জানিসনা কেন তুই এতো তাকে আগলে রাখতে চাইছিস,ঠিক তেমনি আমিও বুঝেছি।।
জেম্মার কথা শুনে কিছুটা অবাক আর কিছুটা লজ্জা পেলো ইভান।।ও জেম্মার কথাকে ঘুরিয়ে দিয়ে বললো ধুর তুমিও না যত বাজে বক,,,দাও তাড়াতাড়ি খাবার আমি আর অপেক্ষা করতে পারছিনা।।
আশাদেবিও ওর কথ্যা ঘোরানো দেখে হেসে কিচেনে চলে গেলেন।।
জেম্মা কি করে বুঝলো আমি কলিকে নিয়ে চিন্তায় আছি,,,,,,ধুর বাবা এই মেয়েদের কে বোঝা খুবই ডিফিকাল্ট।তার চেয়ে বরং আমি খেয়ে নিয়ে যাই দেখি উনি কেমন আছেন।।আর রোহিতের সাথেও কথা বলতে হবে যাতে ওদেরকে পেমেন্ট নিয়ে কোনো কথা না বলতে।।ও চায়না কলির ওপর আর কোনো দুশ্চিন্তা বাড়াতে।।
এদিকে,,,,,,,,,,,,,,,,,,
গাড়িতে বসে হর্ন বাজিয়েই যাচ্ছে মিহির।।মিলি আর কলি তারাতারি আজকে বেরোবে কারণ ওদেরকে প্রথমে হসপিটাল আর পরে কলেজও যেতে হবে ।কলির একদম ইচ্ছে ছিলোনা কলেজে যাওয়ার।কিন্তু কি আর করবে সামনে বসন্ত উৎসবের জন্য যে নৃত্যনাট্য হবে সেটার পুরো ভার কলির ওপর।তাই তার উপায় না থাকলেও তাকে যেতে হবে।।অবশ্য মিলি ওকে বলেছে ও সবাইকে ভালো করে বুঝিয়ে তাড়াতাড়ি ওখান থেকে বেরিয়ে আসবে,,আর তারপর একেবারে হসপিটালে কাকিমাকে দেখে ওর দাদা ওকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসবে।।এরই মধ্যে ও ওর ভাইয়ের স্কুলে ফোন করে সব পরিস্থিতি বলেছেন হেডস্যারকে।।উনিও বলেছেন যে ওর মা সুস্থ হয়ে বাড়ি আসার পরই সায়ন যেন স্কুল শুরু করেন।।আর এর মধ্যে তিনি সায়ন যাতে সব পড়া ঠিক মতো পায় সেই ব্যবস্থাও করেছেন।।আসলে সায়ন স্কুলের ফার্স্টবয় আর ও খুব শান্ত ভদ্র ছেলে টাই সব টিচাররাই সায়নকে খুব ভালোবাসে।।তাই ওর এই বিপদে সবাই ওকে এই ভাবেই হেল্প করবে বলে ঠিক করেছেন।।
- **মায়ের কেবিনে ঢুকতে গিয়ে ভিতর থেকে কিছু কথা ও হাসির আওয়াজ শুনতে পেলো ওরা
- তিনজন।। কাঁচের দরজায় উঁকি মেরে ইভানকে ভিতরে দেখেই অবাক হয়ে গেল ওরা।।
- **মিহির---বাবাহ স্যার এত সকালে তাও আবার এখানে কেন?
- **কলি---- মিস্টার চ্যাটার্জী যে আজকে এত সকালে আসবে সেটা তো কালকে বলেননি।অবশ্য কালকে হঠাৎ ওনার কি এমন হলো যে ওই ভাবে চলে গেলেন,,আর আমিও কিছু জিজ্ঞাসা করলাম না।।
ওদের ভাবনার মাঝেই মিলি দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে বলে ,,,,,মিমি কেমন আছো এখন?
ওদের ঢুকতে দেখতে ইভানও চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালো আর কলির দিকে একবার তাকাতেই ওর দৃষ্টি স্থির হয়ে গেল।।
সকালে স্নান করে এক কোমর ভেজা চুলকে একটা ছোট্ট ক্লিপ দিয়ে কিছু টা আটকে সব ছেড়ে রেখেছে কলি।।সকালের ভেজা স্নিগ্দ্ধ নিষ্পাপ লাগছে তার চোখ মুখ।।হালকা গোলাপি খুব সাধারণ কুর্তিতেই তাকে পদ্মের মতোই উজ্জ্বল লাগছিলো।।কিছুক্ষন মুগ্ধ দৃষ্টিতেই ইভান কলিকে দেখছিলো।।কিন্তু কলির চোখে জল দেখে তার ভ্রু কুঁচকে গেল।।সে কিছুটা গম্ভীর হয়েই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মিহিরকে বললো,,,,,মিহির আমি ডক্টরের সাথে কথা বলে নিয়েছি,,আন্টি এখন সম্পূর্ণ বিপদ মুক্ত।।হ্যা কিছুদিন ওনাকে এখানে রেস্টে থাকতে হবে তারপর ওনাকে এখান থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।।আর হ্যা এখানের সব বিলস আমি ক্লিয়ার করে দিয়েছি আর এরপর যা কিছু হবে সেটাও তুমি দেখে নিও।।এই নিয়ে অহেতুক কেউ যেন চিন্তা না করে আর না করে কোনো কান্না,,,,am i clear?
**yes স্যার বলেই মিহির ভাবতে লাগলো,,,,কি হলো হঠাৎ তার স্যারের?আজ 5বছর তার সাথে আছেন ও,,কারোর জন্যই ওনাকে এতটা বিচলিত হতে দেখিনি কি এমন হলো যে তাদের এই স্বল্পভাসী স্যার ও আজ এত কথা বলছেন আর অন্য কে নিয়ে এত ভাবছেন।।হ্যা মানছি উনি ওনার বাবা মায়ের প্রতিষ্ঠিত একটা অনাথ আশ্রম আর একটা বৃদ্ধাশ্রম চালান। তাও সেখানে প্রতিবার আমিই যাই টাকা দিতে বা ওরা আসে অফিসে।।কিন্তু নিজে কোনোদিন সরাসরি এই ভাবে কাউকে সাহায্য করেননি তাও এত জোর দিয়ে।।তবে কি আমি যেটা ভাবছি সেটাই ঠিক।।উনি কি কলিকে কোনো ভাবে পছন্দ করেছেন? ধুরররর না না হতেই পারেনা।।আজ পর্যন্ত যে কোনো মেয়েকে ধারের কাছে আসতে দেয়নি সে কিনা কলির মতো সাধারণ মেয়েকে পছন্দ করবে? হ্যা মানছি কলি সুন্দরী তবুও ও স্যারের সাথে যায়না।।
"*" কলি ইভানের কথা শুনে ওর দিকে তাকিয়ে দেখলো,,,,,আজকে ইভান একটা ডার্ক ব্লু কালারের সুট পড়েছে,,হাতে দামি ঘড়ি,পায়ে ব্ল্যাক শু আর চুলটা ব্যাকব্রাশ করে সুন্দর সেট করা।।ফর্সা গালে হালকা চাপদারি,টিকালো নাক আর গভীর চোখের এই 6" ফিটের ছেলেটাকে ওই ভাবে ওর দিকে তাকাতে দেখলে ওর ভিতরে ছেলে ভালো লাগার শিরশিরানি বয়ে যায়।।কিন্তু আজকের এই দৃষ্টিতে কিছুটা মুগ্ধতা আর কিছুটা বিরক্তিও ও লক্ষ্য করে।।
ওদের দুজনকেই এই ভাবে দেখতে দেখে মিহির ইভানকে বলে ,,,,স্যার আপনি কি এখনই অফিসে যাবেন?
ওর গলার আওয়াজ পেয়ে ইভান ঘাড় নাড়লো শুধু।।
**মিহির----স্যার বলছি যে আমার আজকে একটু যেতে দেরি হবে,,,আসলে মিলি আর কলিকে ওদের কলেজে ছেড়ে দিয়ে আমি অফিসে যাবো।।
তোমাকে ওদের জন্য ব্যস্ত হতে হবেনা,,,আমি ওদেরকে কলেজে নামিয়ে দেব।।
ইভানের কথা শুনে তিনজনই বড়ো বড়ো চোখ করে ওর দিকে তাকিয়ে রইলো।।ওদের নিজেকে এইভাবে তাকাতে দেখে ইভান নিজের গলাকে একটু গম্ভীর করে বললো,,,মিহির তোমার এখানে আন্টির ব্যাপারে রিসেপশনে কিছু ফর্মালিটি করার আছে সো তুমি সেই দিকে দেখো আর হ্যা,,,,আমি আন্টির জন্য একটা 24 ঘন্টার একটা ট্রেনড নার্স আর একটা আয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।তুমি সেটাও ভালো করে দেখে নিও।।
ইভানের কথা শুনে কলির চোখ কৃতজ্ঞতায় জলে ভরে উঠলো।।ও মনে মনে ভাবলো ,,,,,এইরকম ভাবে যত্ন ওর নিজের কোনো আত্মীয়ও কোনোদিনও করতোনা।সেখানে ইভান ওর একদমই অপরিচিত।।
ইভান আবার কলির চোখের জল আর কলির মুখ দেখে ওর মনের কথা গুলো বুঝতে পারলো।।
**আমি আমার কর্তব্য করেছি মাত্র,,কেউ যদি ভাবে আমি কাউকে দয়া করছি তবে সেটা তার ভাবনা।।সেখানে আমার কোনো দায় নেই,,,,বলেই ইভান মিতাদেবীকে বললো,,,আন্টি আমি এখন যাই আর আপনি কিন্তু কোনো রকমের চিন্তা করবেননা।জানবেন আপনার আরও একটা ছেলে আছে,যে সে তার মাকে কিছু হতে দেবেনা।।
মিতাদেবী খুশি মনে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে ওকে বললো,,,,না আমি আর চিন্তা করছিনা।আমি জানি আমার জন্য আমার এক ছেলে আছে।।তুমি নিশ্চিন্তে অফিসে যাও আমি ঠিক থাকবো,,বলেই উনি ইভানের চিবুক ছুঁয়ে একটা চুমু দিলেন।।
ইভানও এতটা ভালোবাসা পেয়ে খুশি খুব কেবিন থেকে বেরোল তবে বেরোনোর আগে সে মিলিকে বললো,,,,,মিলি আমি নিচে ওয়েট করছি ,,তোমাদের যদি কান্না টাননা বাকি থাকে তবে সেটা মিটিয়ে এসো,,তবে একটু তাড়াতাড়ি ।কথা টা বলার সময় একবার কলির দিকে আড় চোখে দেখেই ব্যিয়ে যায়।।আর কলির কথা তা শুনেই ভ্রু টা কুঁচকে যায়,,,,,,,,,,
মানেটা কি আমি কি ইচ্ছে করে কাঁদছিলাম নাকি।।মায়ের ওই রকম অবস্থা দেখেই তো আমি নিজেকে আটকাতে পারছিলামনা।।আর উনি কি করে বুঝবেন যে ,,যার বাবা নেই শুধু মাই তার সম্ভল তার কিছু হয় গেলে কেমন লাগে।।কথা টা সে বলেই দিলো।।
কথাটা শোনার পর মিহির কলিকে বললো,,,,কলি তুই ওনাকে চিনিসনা তাই এইটা বলে ফেললি।কিন্তু সবটা জানলে এমনটা বলতিসনা।।উনি হয়তো একটু রাগী ঠিকই কিন্তু ওনার মতো মন কারোর নেই।।
- মিতাদেবী মিহিরের কথা শুনে বললো কেনো কি হয়েছে ছেলেটার।।
- স্যারের যখন 5বছর বয়স তখন স্যারের বাবা আর মা স্যারেরে 5বছরের জন্মদিনের দিনই একটা এক্সিডেন্টে মারা যান।তাও আবার ওনার জন্য কেক আনতে গিয়ে।।
- জানো মিমি তাইজন্যই তো স্যার তারপর থেকে আর কোনোদিন জন্মদিন পালন করেনা,,,আর কেউ যদি ভুলেও ওনাকে উইশ করে তবে তার চাকরি থাকেনা ওই অফিসে।।
- বাবা মা কি সেটা মনে হয় উনি আমাদের থেকেও বেশি জানে ,,,তাই হয়তো সবাই মুখ ফিরিয়ে চলে গেলেও উনি মিমিকে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যেতে পারেননি।।শুধু হসপিটালেই নিয়ে আসেননি সাথে মিমির অপারেশন ও ওষুধের যাবতীয় খরচাও উনি দিয়েছেন।।এইবার বল উনি কি সত্যিই খারাপ মানুষ?
- মিহিরের কথাগুলো প্রত্যেকটা কলির বুকে কাঁটার মতো বিধছিলো।।ঘরে থাকা সবারই চোখে জল।।
- মিতাদেবি-- সত্যিই ছেলেটা খুব ভালো আর শুধু ভালোই নয় এখজন অসাধারণ উদার মনের মানুষ।কি সহজেই আমাকে মায়ের আসনে বসিয়ে দিলো।কে বলবে ও অত বড়ো কোম্পানির মালিক।।
- মিলি---হম্ম টমি ঠিকই বলেছো মিমি আমিও প্রথমে ওনাকে একটু অহংকারী ভেবেছিলাম কিন্তু এখন দাদার কথা শুনে ওনার জন্য অনেক শ্রদ্ধা বেড়ে গেল আমার।।
- কলি---ছি ছি কলি তুই না জেনে একটা মানুষের প্রতি এই রকম কি করে বললি,,,,যেখানে তোর চরম বিপদের দিনে একমাত্র তোর সবথেকে ভরসার জায়গা হয়েছিলেন।।তুই তাকেই অপমান করলি।।
- এখন কি করে ওনার সামনে যাবি।।
- কলির চোখের জল দেখে ওর মা ওকে ডাকলো,,,,কলি মা আয়ে আমার কাছে একটু বসতো।।
- কলি ওর মায়ের কাছে এসে মাকে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে উঠলো।।
- "" এ আমি কি বললাম মা,,উনি তো আমাদের এতো উপকার করলো তাও বিনা স্বার্থে ,,তাও আমি এইভাবে ওনার সম্বন্ধে বললাম?""
মিতাদেবী মেয়ের চোখের জল মুছিয়ে বললেন ,,,,পাগলি মেয়ে আমার,,,তুই কি জানতিস ওর ব্যাপারে তাই বলে ফেলেছিস,,আর এখন যখন জেনে গেছিস তখন তুই ওকে আরও ভালো করে সম্মান দিতে পারবি।।তাই এইসব না ভেবে ভবিষ্যতে ওকে যাতে না ভুল বুঝিস সেই চেষ্টাই করবি কেমন।।
কলি কিছু না ভেবেই মাথা নাড়াতে মিতাদেবীর মুখে একটা রহস্যের হাসি ফুটে উঠলো।।।।।।।।
সমাপ্তি: (Conclusion)
গল্পের শেষ ভাগে ইভান ও কলির সম্পর্ক দায়িত্ব থেকে ভালোবাসায় রূপান্তরিত হয়। ইভান কলির জীবনে একটি নতুন অধ্যায় শুরু করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
"আমাদের জীবনে হয়তো অনেক দুঃখ আছে, কিন্তু সেই দুঃখগুলো আমাদের একে অপরের কাছাকাছি নিয়ে এসেছে।"
FAQ
ইভান কি সত্যিই কলির প্রতি বিশেষ অনুভূতি তৈরি করছে?
পরের পর্বে ইভানের আচরণে পরিবর্তনের কারণ খুঁজে পাওয়া যাবে।কলি কি ইভানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারবে?
কীভাবে কলি ইভানের সাহায্যের প্রতিদান দেবে তা জানতে অপেক্ষা করুন।মিহিরের সন্দেহ কি সত্যি?
ইভান কি সত্যিই কলিকে পছন্দ করে, নাকি এটি তার কর্তব্যবোধের ফলাফল?মিতাদেবীর রহস্যময় হাসির কারণ কী?
মায়ের মুখে রহস্যের ইঙ্গিত কী বার্তা দেয়, তা পরের পর্বে পরিষ্কার হবে।ইভানের অতীতের দুঃখজনক ঘটনা তাকে কীভাবে প্রভাবিত করেছে?
ইভানের শৈশবের ট্র্যাজেডি তার বর্তমান জীবন ও সম্পর্ককে কীভাবে রূপ দিয়েছে?কলি কি তার মায়ের দেখাশোনার পাশাপাশি নিজের অধ্যায়গুলো সামলাতে পারবে?
কলির সামনে কী চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে, তা জানতে হলে পড়ুন পরের অংশ।
Related Posts/Links
আরও পড়ুন: সেরা বাংলা রোমান্টিক গল্পসমূহ
Bondini - Session 1
Sedin Choitro Mash - Session 1
Thanks for your feedback