Bondini - Episode - 19।। New Bengali Story 2024
রাজবীরের অপ্রত্যাশিত প্রত্যাবর্তনে মীরার পৃথিবী কেঁপে ওঠে। সে কি শক্ত থাকবে, নাকি পুরোনো ক্ষত আবারও খুলে যাবে? ভালোবাসা, হারানো ও বিশ্বাসঘাতকতা কীভাবে তাদের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলবে, তা জানতে গল্পটি পড়ুন
![]() |
Bondini Episode 19 - Bangla story |
Bondini:Episode 18 - Romantic Bengali Story
হ্যালো এভরিওয়ান,,, গুড ইভনিং। মিস্টার গোমস মিটিং রুমে সবাইকে বললো।
,
গুড ইভনিং স্যার।প্রত্যুতরে অনেকেও সবাই জানালো।
,
আমি জানি আপনাদের মনে আজকের এই মিটিংটা নিয়ে অনেক জিজ্ঞাসা আছে।তাই আমি আর কৌতূহল না বাড়িয়ে যে জন্য মিটিং ডেকেছি তাকেই বরং ডেকেনি।প্লিজ কাম মিস্টার রাজবীর সিংঘানিয়া।
,
মিটিং রুমের দরজা ঠেলে গট গট করে জুতোর আওয়াজ করে রুমে ঢুকলো রাজবীর।
,
মিস্টার গোমসের মুখে রাজবীরের নাম শুনেই চেয়ারে বসে থাকা আকাশের কানে যেন মনে হলো যেন বাজ পরেছে। হতবম্ভ হয়ে নিনের চেয়ারেই বসে আছে ও।
আর এদিকে মিটিং রুমে উপস্থিত যত ফিমেল ডক্টর,নার্স আর স্টাফেরা তো হা হয়ে এই নতুন আগন্তুককে দেখে যাচ্ছে।
,
মেয়েদের এমন দৃষ্টি রাজবীরের কাছে নতুন কিছু নয়।আগেও মেয়েরা ওর এক ঝলক পাওয়ার জন্য আকুল হয়ে চেয়ে থাকতো।শুধু একজন ছাড়া।আর তাইতো রাজবীরও সেই নারীর জন্যই আজও অপেক্ষায় আছে।
,
নিজের চেয়ারে এসে বসে রাজবীর সামনের দিকে তাকালে ওর চোখ যায় সামনে বসে থাকা আকাশের দিকে।ভ্রু কুঁচকে ওঠে ওর।ডেভিড এর দিকে তাকালে দ্যাখে সেও ওরই মতন আকাশের দিকে চেয়ে আছে।
মনে মনে কিছু খুঁজে পাবার আশায় রাজবীর আকাশের দিক থেকে নিজের চোখ সরিয়ে নেয়।ওর মুখ দেখলে কেউ বুঝতে পারবেনা ওর মনে কি চলছে।
,
মিস্টার সিংঘানিয়া আজকে আমি হসপিটালের সবার সাথেই আপনাকে ইন্ট্রোডিউস করিয়ে দেব।
,
আকাশ একবার মিস্টার গোমসের দিকেয়ার একবার রাজবীরের দিকে চেয়ে বোঝার চেষ্টা করে রাজবীর এখানে কেন।
,
প্রথমেই এখানের 5 জন সিনিয়র ডক্টরের সাথে আলাপ করে নিন।এই হলো মিস্টার ফিলিপ নিউরস্পেশালিস্ট,,,ডক্টর নিজাম ক্যান্সার স্পেশালিস্ট,,,,,ডক্টর সিদ্ধার্থ সিনহা হার্ট স্পেলালিস্ট,,,,,ডক্টর স্মিথ কার্ডিও স্পেশালিস্ট,,,,ডক্টর ব্রাউন চাইল্ড স্পেশালিস্ট। এছাড়া ডক্টর অলিভিয়া গাইনোস্পেশালিস্ট,,,,ডক্টর আকাশ সেন জেনারেল ও হার্ট ফিজিসিয়ান।আরও অনেক জুনিয়র ডক্টর আছে তবে তারা বেশিরভাগ এখন রাউন্ডে আছে।আমাদের এখানের মেট্রোন হলো মিসেস উইলিয়াম উনি এখানের সব ডক্টর ও নার্সদের ওনাদের দেখাশোনা ও সিডিউল বোঝাতে সাহায্য করে।আরও একজন এখানে আছে যে গত দুবছর ধরে আমার এই হসপিটালের রূপটাই বদলে দিয়েছে তার কেয়ার আর ভালোবাসায়। তার নাম হলো,,,,,,
,
মিস্টার গোমসের কথায় আকাশ মনে মনে ঘাবড়াতে শুরু করলো।না নিজের জন্য ও আগেও কোনোদিন ভয় পায়নি আর না এখন পায়।আজকে যদি মীরার সাথে রাজবীরের সামনাসামনি হয় না জানি মেয়েটা আবার কতটা আঘাত পাবে।খুব রাগ হয় ওর ভগবানের ওপর।কেন ,,কেন বারে বারে মেয়েটাকেই এতো কষ্ট পেতে হবে।কি সুন্দর আজকে মেয়েটার মুখে হাসি ফুটেছিলো।
আজকে মেয়েটা সিদ্ধার্থের সাথেও অনেকটাই সহজ হয়ে গেছিলো।যখনই মেয়েটার জীবনটা একটু গোছানোর মনে হয় তখনই কোনো না কোনো ঝড় এসে ঠিক সব ধ্বংস করে চলে যায়।যেমন আজকে এই রাজবীর নামের ঝড় টা আবার এসেছে ওর জীবনে।ঠিক সেই সময়ই দরজা ঠেলে ঢুকে আসে মীরা।যে ভয়টা পাচ্ছিলো আকাশ এখন সেটাই হতে যাচ্ছে।
,
একসকিউজমি স্যার,,,,,,,,,,মে আই কামিং।
,
অপ্রত্যাশিত তিন বছর পর সেই চেনা পরিচিত নিজের একান্ত নারী টির গলা শুনে চমকে সামনের দিকে তাকালো রাজবীর। মুহূর্তেই ওর হার্টবিট যেন বন্ধ হয়ে গেলো নিজের আকাঙ্খিত নারী টিকে দেখে।লাল ঢাকাই শাড়িতে এক কোমর খোলা চুলে ওর দিকে পিঠ করে দাঁড়িয়ে আছে ওর মনের মানুষ,,,,,ওর অর্ধাঙ্গিনী।হ্যাঁ ওটা মীরাই। মীরাকে চিনতে একটুও ভুল হয়না রাজবীরের।যাকে এতদিন পাগলের মতো সারা পৃথিবীতে খুঁজে বেড়াচ্ছে সেই মীরা এখন তার চোখের সামনেই দাঁড়িয়ে।
,
ওদিকে মীরার এখনো অজ্ঞাতো যে ওর পিছনেই ওর স্বামী তথা রাজবীর বসে আছে। সেতো নিজের কাজ করতেই বিভোর।হসপিটালের একটা স্টাফকে নিয়ে প্রত্যেকের টেবিলে কফির মগ রাখছে আর মিষ্টি মুখে তাদেরকে গুড ইভনিং বলছে।
একে একে সবাইকে কফি দেবার সময় আকাশকেও কফি দেয়।কিন্তু মীরা দ্যাখে আকাশ ওর দিকে এক করুন নজরে তাকিয়ে আছে।মীরা বুঝতে পারেনা আকাশ ওকে এভাবে কেন দেখছে। মীরা গুরুত্ব না দিয়ে পাশের চেয়ারে সিদ্ধার্থের দিকে কফি মগ বাড়ালে সিদ্ধার্থ মুচকি হেসে আস্তে করে বলে ,,,,,,,,,, রাত্রে আমাদের বাড়িতে কিন্তু তোমরা ইনভাইট হয়েছো তাড়াতাড়ি আসবে,,,আমি অপেক্ষায় থাকবো।মীরা সিদ্ধার্থের কথা কিছু না বলে একটু হেসে মিস্টার গোমসের কাছে যায় কফি দিতে।
পিছন ফিরে মিস্টার গোমসকে কফি দিতেই যাবে ঠিক ওই সময়ই ওর দৃষ্টি যায় মিস্টার গোমসের পাশে বসা রাজবীরের দিকে।
দুজনের দৃষ্টিই দুজনের দিকে স্থির।থর থর করে কেঁপে ওঠে মীরার হাত। কফিকাপ থেকে চলকে কফি পরে যায় মীরার হাতে।
আহঃ,,,,,,,,,,,,একটা আওয়াজ হতেই রাজবীর সঙ্গে সঙ্গে উঠে পরে চেয়ার থেকে মীরার হাত থেকে কফি কাপটা নেওয়ার জন্য।কিন্তু ওর আসার আগেই আর একটা হাত মীরার হাতটা ধরে নেয়।
,
ইশ,,,,,,, কি করলে মীরা তুমি,,,,,,,একটু সাবধানে কাজ করবে তো।দ্যাখো কতটা পুরে গেলো।লাল হয়ে গেছে জায়গাটা।সিদ্ধার্থ মিস্টার গোমসের পাশেই বসেছিলো তাই ও আগেই উঠে মীরার কাছে পৌঁছে যায়।
,
এদিকে মীরার হাতে অন্য কারোর হাত দেখে রাগে মাথার শিরা দপ দপ করতে থাকে রাজবীরের।নিজের জায়গায় ফিরে এসে পাশে পরে থাকা ফোনটাকে হাতে নিয়ে রাগের তাতেই চাপ দিতে থাকে।
,
এক্সকিউজমি স্যার,,,,আমি মীরাকে নিয়ে আমার কেবিনে যাচ্ছি,,ওর হাতে ড্রেসিং করতে হবে নাহলে ইনফেকশন হয়ে যাবে।
,
ওখানে থাকা সবাই হঠাৎ এই রকম অবস্থায় অবাক হয়ে যায়।কিন্তু মীরাকে সবাই এখানে খুব ভালোবাসে তাই ওর এমন হওয়ায় সবাই বলে,,,না না ডক্টর সিনহা আমি ওকে নিয়ে যান আর ট্রিটমেন্ট করুন।
,
মিস্টার গোমসও বলেন,,,,,সিদ্ধার্থ তুমি আগে ওর ড্রেসিং করে আসো তারপর নাহয় মিটিং করবো। ততক্ষনে আমরা কফি খাই ,,,,,কি ঠিক আছে তো মিস্টার সিংঘানিয়া।
,
পাশে বসে থাকা রাজবীরের তখন কারোর কথাই কানে ঢুকছেনা।ও এক ভাবে তাকিয়ে আছে মীরার দিকে।
,
আর মীরা মুখ নিচু করা থাকলেও বুঝতে পারছে রাজবীর ওকেই দেখে যাচ্ছে।তাই তাড়াতাড়ি সিদ্ধার্থের থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বললো,,,,, ডক্টর সিনহা আপনি এতো ব্যস্ত হবেননা।সামান্যই পুরে গেছে আমি রিটা কে দিয়ে ওষুধ লাগিয়ে নিচ্ছি।প্লিজ আমার জন্য মিটিং ডিলে করতে হবেনা।
,
আকাশ বুঝতে পারছে মীরা এখন এখান থেকে পালিয়ে যেতে চাইছে।কিন্তু এইভাবে সবসময় পালিয়ে গেলে হবেনা।সমস্যা থেকে মীরা যত পালাবে সমস্যা ততই সামনে আসবে।তাই ও নিজেই বলে,,,,,,,,ডক্টর সিনহা আপনি মিটিংয়ে থাকুন আমি বরং মীরাকে নিয়ে যাচ্ছি।সিদ্ধার্থের আর কোনো কথা না শুনেই আকাশ মীরার হাত ধরে একপ্রকার জোর করেই নিয়ে বেরিয়ে যায়।
,
আকাশের এই কাজে একটু অবাক হয় সিদ্ধার্থ।কিন্তু কিছু মনে করেনা কারণ ও জানে মীরা আর আকাশ খুব ভালো বন্ধু আর আকাশ ওদের ফ্যামিলি মেম্বার।
,
কিন্তু রাজবীর আকাশের এই কাজে ভিতরে ভিতরে ভীষণ রেগে যায়।ওর মনে হয় এই ডক্টর সিনহা আর ওই আকাশের হাত গুলোকে ওদের শরীর থেকে আলাদা করে দিতে।রাগে ওর মুখ লাল হয়ে যায়।
,
ওর মুখ দেখে মনে মনে ভয় পেয়ে যায় ডেভিড।কারণ ও খুব ভালো করে জানে রাজবীরের জীবনে মীরার কি অবস্থান।যেখানে অন্য কোনো ছেলের মুখে মীরার নাম পর্যন্ত সহ্য করতে পারেনা,,,সেখানে ওর সামনে ওর স্ত্রীয়ের কেউ হাত ধরবে সেটা কি করে ও বরদাস্ত করবে।
ডেভিড জানেনা আগামীতে আর কি কি ঝড় উঠবে এদের জীবনে।
,
মীরাকে প্রায় জোর করে নিয়ে নিজের কেবিনে নিয়ে আসে আকাশ।
ওকে একটা চেয়ারে বসিয়ে প্রথমেই আইস প্যাড দিয়ে আগে হাতের লাল জায়গাটায় বরফ দেয় আকাশ।
আকাশ দেখে মীরা স্থির হয়ে কেমন বসে আছে।ওর মধ্যে কোনো অনুভূতিই ও লক্ষ্য করতে পারছেনা।
মীরা,,,,,আকাশ খুব নরম ভাবে ডাকলো মীরাকে।
,
মীরা আস্তে আস্তে ওর চোখ আকাশের দিকে রাখলে আকাশ বলে,,,,,,,,ট্রাস্ট মি আমি সত্যিই কিছুই জানতামনা।মিটিংয়ের সময়ও মিস্টার গোমস কাউকেই বলেনি আজকের স্পেশাল গেস্ট হবে রাজবীর।যখন ওনার মুখ থেকে নামটা শুনলাম তখনই আমি ভয় পেয়ে গেছিলাম তোমার জন্য।কিন্তু উপায় ছিলোনা তখন তোমাকে বলার।নাহলে আমি কিছুতেই ওর সামনে তোমাকে আসতে দিতামনা। আকাশ মরিয়া হয়ে বলতে লাগলো।
,
আর কতদিন পালিয়ে বাঁচবো আকাশদা। একদিন না একদিন আমাকে যে ওর সামনে আসতেই হত তাইনা! যাক ভালোই হয়েছে আজকে মুখোমুখি দেখা হয়ে গেলো।
,
মীরা,,,, আর ইউ ওকে?
আমি ঠিক আছি আকাশদা,,, ইনফ্যাক্ট এবার থেকে আরো বেশি করে আমাকে ঠিক থাকতে হবে।দুর্বল হওয়ার কোনো জায়গাই আর রাখবোনা যাতে কেউ হুট করে সামনে আসলেও আমি দুর্বল হবোনা।কিছুক্ষন থেমে মীরা আবার বললো,,,,,,,, ভয় নেই আকাশদা এই মীরা সেই আগের মীরা নেই যে ওই মানুষটার সব অত্যাচার সহ্য করেও তাকে ভালোবাসবে। সেই মীরা তিন বছর আগেই মারা গেছিলো যেদিন সে নিজের জন্মদাত্রীকে আর নিজের সন্তানকে সারাজীবনের মতো হারিয়েছিল।
আমি জানিনা কেন সে এখানে এসেছে,,কিন্তু আমার ওপর ভরসা রাখতে পারো তোমরা আমি আর নিজেকে হারাতে দেবোনা।
,
রাজবীর এই হসপিটালের 50% ওনার।মিস্টার গোমস টাই সবার সাথে ওকে পরিচয় করাতেই এই মিটিং ডাকা।ইশ আমি যদি আগে জানতে পারতাম আজকে ওর জন্য এই মিটিং ডেকেছে তাহলে আমি আজকে তোমাকে আসতেই দিতামনা।
,
মীরা ম্লান হেসে বললো,,,,আজ নাহোক কাল আমাদের দেখা হতোই আকাশদা। আর আমি তো কোনো অপরাধ করিনি যে পালিয়ে বেড়াবো।যে মানুষটা নিজের বিকৃত মানুসিকতার জন্য একটা বন্ধুত্বের সম্পর্ককে নোংরামির নাম দেয়,,,তার জন্য আর যাই হোক আমি লুকিয়ে থাকবোনা। চলো তোমার মিটিংয়ের দেরি হয়ে যাচ্ছে তুমি যাও আর হ্যাঁ এখনই এই ব্যাপারে দাদাভাই বা কাউকে কিছু বলোনা। আমার জন্য যদি কেউ সাফার করে থাকে তবে সেটা দাদাভাই আর বৌদিভাই।
দাদাভাই আমার জন্য নিজের সবকিছু ছেড়ে দিয়ে আজকে একটা কোম্পানির সামান্য ম্যানেজারের কাজ করছে। আমি আর যাই হোক এই মানুষটার জন্য নিজেকে দুর্বল করবোনা। আমার মাথার ওপর আমার মায়ের পরে একমাত্র আমার দাদাভাইই আছে টাই তাকে কষ্ট দিয়ে কোনো কাজ আমি আর করবোনা।একবার ভুল করে যে কাজটা আমি করেছিলাম সেটা ভবিষ্যতে আর রিপিট করবোনা।
বৌদিভাইও আমার জন্য নিজের পরিবারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।তাই তাকেও আমি ওই মানুষটার জন্য অসম্মান করবোনা।
হাতের ড্রেসিংটা হয়ে গেছে তো তুমি যাও ওখানে।আমি বরং চিলড্রেন ওয়ার্ডে যাচ্ছি।সুজির কালকে শরীরটা খারাপ ছিলো।তাই ওকে আমি দেখতে যাই।
,
আমি জানি মীরা তুমি বাইরে থেকে যতই নিজেকে দেখাও যে তুমি দুর্বল নও রাজবীরের জন্য কিন্তু আজও মানুষটাকে তুমি ভালোবাসো।না বাসলে ওর নামের সিঁদুর তোমার মাথায় থাকতোনা।তুমি যে সেটা লুকিয়ে রাখো আমি সেটাও জানি।
একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে আকাশ বললো,,,,,,,, তুমি শিওর মীরা রাজবীরের সামনে আসলে তুমি নিজেকে শক্ত রাখবে।আর সেই মানুষটা যদি তোমাকে বলে সে তোমাকে ফিরিয়ে নিতে চায়।তাহলে তুমি কি করবে।সে যদি ক্ষমা চায় নিজের সব কাজের জন্য ,,,বল মীরা কি করবে তখন।
,
রাগে মীরার চোখ জ্বলে উঠলো,,,,,, আকাশের চোখে চোখ রেখে বললো,,,,,,,,, কিছু ভুলের ক্ষমা হয়না আকাশদা। আর ও যে ভুলটা করেছে সেটা ভুল নয় অন্যায়।নিজের দিদির ওপর অন্যায় দেখে ও আমাকে সেই একই জিনিস ফিরত দিতে চেয়েছিল। এবং সেটা এমনভাবেই ফেরত দিলো যে আমি নিজের মাতৃ সত্তা আর নিজের জন্মদাত্রিকেই চিরদিনের মতো হারিয়ে ফেললাম। বৌদিভাইকে তো দাদাভাই এইসব কিছুই করেনি।যা করেছিল সেটা মিস্টার রাজপূত আর মিহুদি।
সেখানে আমার দোষটা কোথায় ছিলো বলতে পারো।কিন্তু ওদের করা অন্যায়ের জন্য সবথেকে বেশি গুনকার দিতে হলো।এমনকি আমার তো বাঁচারও কোনো চান্স ছিলোনা সেদিন তুমি যদি আমাকে ঠিক সময়ে হসপিটালে না নিয়ে যেতে তবে হয়তো আজকে আমি আমার মা ও সন্তানের কাছেই থাকতাম।
কি জানো আকাশদা ছোট থেকেই আমি বড্ডো অভাগী।মা ছাড়া আমাকে আর কেউই ভালোবাসেনি একমাত্র এখন দাদাভাই আছে এখন।জানি কথাটা শুনতে খারাপ লাগছে তোমার কিন্তু কথাটা যে বড্ডো সত্যি।সবাই নিজের স্বার্থের জন্য আমাকে ব্যবহার করেছে।
প্রথমে যে আমার বায়োলজিকাল বাবা সে তার অসুস্থতার জন্য আমাকে স্বীকার করতে চাইলো।কারণ আমার টিসু নাহলে ওনার বোন ম্যারো ঠিক হবেনা।
দ্বিতীয়ত ,,আমি যাকে বেস্ট ফ্রেন্ড ভাবতাম সে আমার সাথে বন্ধুত্ব করলো কারণ আমি পড়াশোনায় ভালো তাই ওকে নোটস লিখে হেল্প করতে পারবো।আর পরে আমারই পিছনে আমার বাগদত্তার সাথে তার সম্পর্ক হয়।
তৃতীয়ত,,,অনিতা আন্টি ,,যাকে আমার মা নিজের বোনের থেকেও বেশি ভালোবাসতো আর আমিও অনিতা আন্টিকে নিজের মায়ের মতোই ভাবতাম।সে কি করলো ,,না নিজের লম্পট বখাটে ছেলেকে সঠিক রাস্তায় আনার জন্য আমার সাথে জোর করেই এনগেজমেন্ট করিয়ে দিলো।আমার মাও মুখের ওপর না বলতে পারলোনা কারণ আমরা অনিতা আন্টির কাছে অনেকভাবে ঋণী।কিন্তু যেই অনিতা আন্টিকে আমি ওর ছেলের আর তৃণার সম্পর্কের কথা বললাম তখন নাকি আমিই হয়ে গেলাম ওদের কাছে খারাপ মেয়ে।
তারপর এলো ওই মানুষটা,,,,যে আমাকে মিথ্যে ভালোবাসা আর আমার মায়ের প্রতি মিথ্যে সহানুভূতি দিয়ে আমার জীবনে প্রবেশ করলো একটা কালো ছায়া হয়ে।সবকিছু আমার থেকে কেড়ে নিলো এক লহমায়।আমার মন,আমার সম্মান,আমার পরিবার আর শেষে আমার সন্তান।কারণ তার দিভাইয়ের জন্য বদলা প্রতিশোধ নিতে।
এখানে সবাই যে যার মতো শুধুই স্বার্থই খুঁজে গেলো আকাশদা।কই কেউতো একবারের জন্য জিজ্ঞাসা করলোনা যে মীরা তুই কি চাস।
সবাই কে আর কি বলবো ওরাতো আমার পরই ,,কিন্তু আমার নিজের মা,,,,সেও নাকি আমার ভালোর জন্য ওই মানুষটার মিথ্যে মিষ্টি কথাতে আমাকেই ভুল বুঝলো।একবারের জন্যও আমার মায়ের মনে প্রশ্ন জাগলোনা যে ছবিগুলো ওদের দেখানো হয়েছে সেখানে আমি থাকলেও আমি এমন কিছু করতে পারিনা।আরে আমার শরীরে ওই মিস্টার রাজপুতের রক্ত যতই থাকুক,,আমার শিক্ষা টা কিন্তু আমার মাই দিয়েছে।একবারের জন্যও আমার মায়ের মনে হলোনা ওর মীরু এমন কিছু কোনোদিনও করতে পারেনা।
আরে আমিতো এখন বেঁচে মরে আছি আকাশদা,,,একমাত্র তোজো সোনার জন্য এখনও আমি ঠিক আছি।নাহলে কবেই হারিয়ে যেতাম।এই মীরার সামনে আজকে যেই আসুকনা কেন এই মীরা সেই মীরা নয় আর কোনোদিনও সেটা হবেনা।তুমি নিশ্চিন্তে থাকো।আমি সব সহ্য করে নিয়েছি কিন্তু নিজের বাচ্চার হত্যাকারীকে কখনোই ক্ষমা করতে পারবোনা।
আমি আসলাম।মীরা কথা গুলো বলেই আকাশের কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো।
,
মীরা চলে যাবার পর আকাশ নিজের চেয়ারে ধপ করে বসে পরলো।ও তো জানে আজকে যে কথাটা মীরা বললো সেটা ওর জন্যও প্রযোজ্য। ওর ও তো স্বার্থ আছে মীরার জন্য।নাহলে মিহুকে কখনোই মেনে নিতে পারতোনা নিজের জীবনে।যে মীরাকে নিজের প্রাণের থেকেও বেশি ভালোবাসে ও শুধুমাত্র তার মুখের হাসি দেখার জন্য ও মিহুকে একসেপ্ট করেছে নিজের লাইফে।
বা এটাও বলা যেতে পারে মীরাকে নিজের চোখের সামনে নিজের বন্ধু হয়ে থাকার লোভটা ও সামলাতে পারেনি।তাইতো যে সম্পর্কে কোনো টানই নেই সেই সম্পর্কটাকে বয়ে বেড়াচ্ছে,,,,শুধুমাত্র মেয়েটাকে চোখের সামনে দেখতে পাবে বলে।একফোঁটা জল আকাশের চোখ দিয়ে গড়িয়ে পরলো।
FAQ
রাজবীরের আসল উদ্দেশ্য কী?
রাজবীর এই হাসপাতালে এসে শুধু নিজের ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য পূরণ করতে এসেছে নাকি তার মনের গভীরে লুকিয়ে থাকা কোনো ব্যক্তিগত অভিপ্রায় আছে?
মীরার মনোভাব কি অটুট থাকবে?
মীরা দৃঢ়ভাবে জানিয়েছে যে সে আর দুর্বল হবে না। কিন্তু রাজবীরের উপস্থিতি কি তার দৃঢ়তা ভেঙে দিতে পারে?
সিদ্ধার্থ ও আকাশের ভূমিকা কীভাবে বদলাবে?
আকাশ আর সিদ্ধার্থ মীরাকে রক্ষা করার জন্য কতটা প্রস্তুত? আর রাজবীরের বিরুদ্ধে তাদের কোন কৌশল তারা প্রয়োগ করবে?
মীরার ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে?
মীরা কি রাজবীরের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ রূপে দাঁড়াতে পারবে, নাকি তার জীবনে নতুন কোনো ঝড় আসবে?
Thanks for your feedback