Bondini - Session 1 । Episode - 3 । Sad Valobashar Golpo 2024
নায়িকার LIFE E আসছে নতুন CHALENGE, VALOBASHA এবং প্রতিশোধের জটিল সমীকরণ.এক রহস্যময় চরিত্রের আগমন ঘটনার আরও উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলছে।বন্দিনী :- পর্ব -- ৩
একটা গমগমে গম্ভীর হাস্কি গলার আওয়াজ পেতেই নিজের ভাবনার জাল থেকে বেরিয়ে এলো মীরা। সামনের মানুষটার দিকে তাকাতেই চোখ আটকে গেলো একজোড়া হালকা নীলচে চোখের ওপর।সার্প জ্য লাইন,পুরু লালচে ফোলা ঠোঁট , তীক্ষ্ণ লম্বা নাক,ঘাড় অব্দি ভিজে চুল
যেটা থেকে টপটপ করে জলের ফোটা নিচের দিকে নেমে পরছে বুকের ওপর।আর সেই বুকের ঠিক বামদিকে লাল হয়ে দাঁতের দাগ স্পষ্ট জ্বলজ্বল করছে। শিরশির করে উঠলো মীরার গোটা শরীর। ওর মস্তিস্ক যেটা বুঝতে পারছে সেটা বুঝেও মন সে দিচ্ছেনা।কিন্তু ও জানে ব্যাপারটা সবটাই সত্যি একদম সকালের সূর্যের মতোই। আপনা আপনিই চোখে জল ভরে উঠলো ওর।
,
মেয়েটাকে এক দৃষ্টিতে লক্ষ্য করে যাচ্ছে ছেলেটা।মেয়েটার প্রত্যেকটা দৃষ্টি,প্রত্যেকটা আচরণ খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারছে।কিন্তু হঠাৎ ওর চোখে জল দেখে আশ্চর্য্য হয়ে যায় ও। তাহলে কি মেয়েটা আফসোস করছে ওর সাথে রাত কাটানোর জন্য।
নিজের মনের ভাব নিজের কাছেই স্পষ্ট হতে দ্রুত রাগে চোয়াল শক্ত হয়ে উঠলো ওর।তাও নিজের মনের ভাব মুখে না ফুটিয়ে শান্তভাবে বলে উঠলো,,,,,,,,,,,মীরা,,,, আর ইউ ওকে? আমি কি হেল্প করবো উঠতে তোমাকে?
,
আবারও ওই গম্ভীর গলার আওয়াজ পেতে মীরার হুস ফিরলো।এতক্ষন যে ও একটা অন্য পুরুষের কাছে এমন অর্ধ উন্মুক্ত অবস্থায় বসে আছে সেটা ভাবতেই ওর শান্ত চোখ চঞ্চল হয়ে উঠলো। গায়ের চাদরটা জড়াতে গিয়েই ওর নজর পরলো বেড সিটের ওপর লাল রক্ত লাগা দাগের ওপর। ভয়ে মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেলো মীরার।জোর করে চেপে চোখ বন্ধ করে দু তিনবার জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে ও বললো,,,,,,,,, মীরা,,মীরা,,,মীরা,,,,শান্ত হ।যা হয়ে গেছে সেটা বদলানো যাবেনা।তাই সব ভুলে নতুন করে আবার শুরু কর।তোকে দুর্বল হলে হবেনা, এতো ভেঙে পরলে মাকে কি করে সামলাবি।তোকে তোর মায়ের জন্য বাঁচতে হবে মীরা। যা এক্ষুনি রেডি হয়ে নে,এখন তোকে হসপিটালেও যেতে হবে।ওখানে যে তোর মা তোর জন্য অপেক্ষা করছে।
,
মেয়েটাকে নিজের সাথেই বিড়বিড় করতে দেখে ভ্রু কুঁচকে উঠলো ছেলেটির। তবুও মুখে কিছু না বলে মেয়েটার প্রত্যেকটা পদক্ষেপ ভালো করে দেখে নিচ্ছিলো ও।
,
হাতড়ে হাতড়ে মেঝে থেকে নিজের জামা প্যান্ট নিয়ে, চাদরটাকে কোনো রকমে গায়ে চাপিয়ে বেড থেকে নামতে গেলো মীরা।কিন্তু তলপেটে একটা তীব্র যন্ত্রনা হতেই ওর পা দুলে উঠলো। পরেই যেতো মুখ থুবড়ে মেঝেতে।কিন্তু তার আগেই একটা বলিষ্ট হাত ওকে বাঁচিয়ে নিলো পরার হাত থেকে। আছড়ে পরলো সেই চিজেল কাট বুকের ওপর মীরা।
,
এতো তাড়া কিসের তোমার। আর এইগুলো নিয়ে কোথায় যাচ্ছো? আমি তোমার জন্য নতুন ড্রেস নিয়ে এসেছি।কালকে তুমি অনেক ড্রিংক করেছিলে তাই জামাগুলো নষ্ট হয়ে যায়।
,
সেই গম্ভীর হাস্কি গলার মালিকটির কণ্ঠে ওর জন্য চিন্তা ও আবেগ শুনতে পেয়ে অবাক হয়ে ঐ নীল চোখের দিকে তাকালো মীরা।
,
মেয়েটাকে এমন অবাক হয়ে ওর দিকে তাকাতে দেখে মনে মনে হেসে উঠলো ও।তারপর খুব যত্ন করে মেয়েটার চুলের কিছু অংশ কানের পাশে ঢুকিয়ে খুব শান্তভাবে বললো ,,,, তলপেটে কি খুব ব্যথা হচ্ছে? তাহলে চলো আমি নিয়ে যাচ্ছি তোমাকে ওয়াশরুমে।বলেই ওকে কোলে তুলতে যাবে তার আগেই মেয়েটা ছিটকে দূরে সরে গেলো।
,
প্লিজ মিস্টার দূরে থাকুন আমার থেকে।আমার কোনো রকম হেল্প চাইনা আপনার থেকে।এমনিতেই আপনি আমার অনেক হেল্প করেছেন।বলেই একটা তাচ্ছিল্যভরা হাসি ফুটে উঠলো ওর মুখে।দ্রুত নিজেকে সামলে দেওয়াল ধরে ধরে ওয়াশরুমে গিয়ে জোরে দরজাটা বন্ধ করে দিলো মীরা।
,
রাগে থরথর করে কাঁপছে ছেলেটা। আবার ,,,,আবার আমাকে আমার কথাকে অমান্য করলো মীরা।এতো সাহস ওর আসে কোথা থেকে , রাজবীর সিংহানিয়াকে ইগনোর করার।যেখানে আমার এক ঝলক দেখার জন্য,আমাকে একবার ছুঁয়ে দেখার জন্য মেয়েরা হাপিতেশ করে মরে।সেখানে এই মেয়েকে আমি ,,,আমি নিজে হেল্প করবো বলছি তার পরেও আমার কথাকে জাস্ট শুনতেই পেলোনা।
তারপর কিছু একটা ভেবে রাজবীরের ঠোঁটে দেখা গেলো এক চোরা বাঁকা হাসি। মিস মীরা রয়,,,, তুমি যত আমার থেকে পালাবে ততই বেশি করে আমাকে দেখতে পাবে।আর কালকের পর থেকে তো এমনিতেই আমি আর তোমাকে আমার থেকে দূরে যেতে দেবোনা।কথাগুলো বলেই নিজের ক্লজেট রুমে চলে যায় রাজবীর।
,
আয়নার সামনে নিজেকে চাদর থেকে উন্মুক্ত করে ভালো করে দেখছিলো মীরা।চোখ থেকে জলের ধারা বয়ে যাচ্ছে।কি ভেবেছিলো আর ঠিক কি হয়ে গেলো ওর সাথে। যে ভালোবাসাকে নিয়ে মীরার এতো অহংকার ছিলো সেটাই কালকে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেলো।নিজের এতদিনের কুমারিত্ব কে ও গুছিয়ে রেখেছিলো ওর সাহিলের জন্য।ভালোবাসলেও মীরা কখনোই নিজের সীমা লঙ্ঘন করেনি।কারণ ওর একটা নীতি ছিলো,বিয়ের আগে ও কখনোই ঘনিষ্ট সম্পর্ক করবেনা।সবটা ও উজার করে দেবে ওর মনের মানুষকে ফুলসজ্জার দিন।সাহিলকেও ও সম্পর্কের শুরুতেই স্পষ্ট বলে দিয়েছিল।এতে ওকে কেউ যদি ব্যাকডেডেড ভাবে তাতে ওর কিছু যায় আসে না।কিন্তু ওর সেই নীতি ওর ভালোবাসার সাথে সাথেই ভেঙে গেছে।
কি ভাবে পারলি মীরু তুই এইটা করতে,,,কি ভাবেএএএএ।একবারের জন্যও তোর মায়ের মুখটা মনে পরলোনা। তুই তো জানিস নিজের জন্ম পরিচয়,তারপরেও তারপরেও তুই কি ভাবে ভেসে গেলি আবেগে।যে যন্ত্রনা ও অপমান নিয়ে তোর মা সারাজীবন কাটিয়ে দিলো,সেই একই ভুল তুই কি করে করতে পারলি মীরু।কি করেএএএএএ,,,,,,,,,,, চিৎকার করে নিজেকেই নিজে বকতে থাকলো মীরা।সাওয়ারের নিচে হাঁটু মুড়ে বসে ঝরঝর করে কাঁদতে লাগলো মীরা।খুব খুব অসহায় লাগছে আজকে মীরার নিজেকে। একটা অবিবাহিত মেয়ের জীবনে নিজের কুমারিত্ব হারানো টা আজকের সময়ে খুব বেশি ম্যাটার করেনা।কিন্তু মীরার ক্ষেত্রে সেটা একেবারেই উল্টো।কারণ মীরা নিজেই একটা অবৈধ সম্পর্কের ফসল।
যদিও এখন ওর যে বায়োলজিক্যাল ফাদার ওকে আর ওর মাকে একসেপ্ট করে নিয়ে নিজের নাম ও পদবি দিতে চেয়েছিল , কিন্তু মীরা সেটা একসেপ্ট করেনি।কারণ ছোট থেকে সমাজে ও নিজের কাছের মানুষদের থেকে প্রত্যেক দিন প্রত্যেক মুহূর্ত যে অপমান পেয়েছে তাতে নতুন করে তার এই পরিচয় নেওয়ার আর কোনো ইচ্ছে বা আগ্রহ কোনোটাই ছিলোনা।
শত কষ্টের মধ্যেও ওর লাইফে কিছু আপন মানুষ ছিলো যাদের জন্য ও এখনো মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়িয়ে আছে।
তাদের মধ্যে এক ওর মিহুদা মানে মিহির রাজপুত।মৈনাক রাজপুত যে মীরার বায়োলজিক্যাল ফাদার তার বড়ো ছেলে। আর ওর টিচার অনিতা আন্টি। অনিতা আন্টি ওর মায়ের ছোটবেলার বন্ধু।যদি প্রকৃত বেস্টফ্রেন্ড বলা হয় তবে অনিতা আন্টি তার সুন্দর উদাহরণ।নাকি তৃণার মতো বন্ধু।যে বন্ধুর পিঠ পিছেই ছুড়ি মারে।
এই দুটো মানুষের জন্যই ছোটবেলায় সব কষ্টের মধ্যেও নিজের পড়াশোনায় কোনো বাঁধা পায়নি। নাহলে সমাজে যে ছেলে মেয়েদের বাবার নাম থাকেনা তাদের যে শিক্ষাটুকুও পাবার অধিকার থাকতে নেই সেটা খুব ভালো করে বুঝে গিয়েছিল মীরা।
,
ঠক,,ঠক,,,ঠক,,,,,,মীরা,,,,আর ইউ ওকে? কিছু প্রবলেম হলে আমাকে বলো প্লিজ। আর কতক্ষন ওয়াশরুমে কাটাবে।
গম গমে ভারি কণ্ঠস্বরটা কানের ভিতরে প্রবেশ কদতেই হুস ফিরে আসে মীরার।
কোনো ক্রমে হাতড়ে শাওয়ারের কলটা বন্ধ করে নিজেকে একটা বাথরবের মধ্যে ঢেকে নিলো মীরা।
,
পাঁচ মিনিট পরেই ওয়াশরুমের লক খোলার আওয়াজ হতেই রাজবীর সেইদিকে ঘুরে দেখলো।
কি অবস্থা করেছে মেয়েটা নিজের।আর কতক্ষন নিজেকে জলের মধ্যে রেখেছিলো যে চামড়াটা এমন ফ্যাকাসে হয়ে গেছে।চুলগুলোও তো ভালো ভাবে মোছেনি,টপটপ করে জল পড়ছে চুল থেকে।চোখগুলো লাল হয়ে ফুলে গেছে।তাহলে কি মেয়েটা কাঁদছিলো ভিতরে? কেন কাঁদছিলো। ওর কি আফসোস হচ্ছে কালকে ইন্টিমেন্টের জন্য। রাজবীর নিজের মনেই কথাগুলো ভাবছিলো, মীরা কে কিছু বলতেই যাবে তার আগেই মীরা বললো,,,,,,,,,দেখুন,,,,একটা জোরে শ্বাস টানলো নিজের ভিতরে।কিছুটা নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে বললো,,,, আমি জানিনা কালকে আমি এখানে কি করে এলাম বা আমাদের মধ্যে কালকে কি হয়েছে।সেটা মনে করতে বা জানতে কোনোটাতেই আমি আগ্রহী নই। আপনি যদি মনে করে থাকেন কালকের ব্যাপারটার জন্য আমি আপনাকে দায়ী করবো তাহলে আপনি ভুল বুঝছেন।আমি জানি আমি কালকে খুবই ড্রিংক করেছিলাম,কিন্তু বুঝতে পারছিলামনা দুটো পেগেই আমি কিভাবে ওইরকম নেশাগ্রস্থ হয়ে পরলাম।যাতে নিজেকেই নিজে সামলাতে না পেরে আজকে ,,,আর তার ওপর আমার কালকের কিছুই কথা মনে নেই।যাইহোক আমি শুধু একটা রিকোয়েস্ট করতে চাই,,,কালকে আমার আর আপনার মধ্যে য,,, যা,,, কি,,ছু হয়েছে সেটা ভু,লে যাওয়াই ভালো।কারণ আপনার কিছু হবে কি হবেনা সেটা জানিনা তবে এর জন্য আমাকে সাফার করতে হোক সেটা আমি চাইনা।এমনিতেই আমার নিজস্ব কিছু প্রবলেম আছে।তাই প্লিজ এই ব্যাপারটা আমাদের মধ্যেই গোপন থাকবে সেটা প্লিজ বলুন।
,
রাজবীর মনে মনে আশ্চর্য্য হয়ে যাচ্ছে মেয়েটার কথা গুলো শুনে।মেয়েটা ওদের কালকের ব্যাপারটাকে নিয়ে কাউকেই কিছু বলতে চাইছেনা ,,,,কেন? যেখানে ওর একটা ভালো সুযোগ ছিলো এর জন্য রাজবীরের থেকে যা ইচ্ছে দাম নেওয়ার।এবং রাজবীর সেটা দিয়েও দেবে।কিন্তু মেয়েটা সবকিছু গোপন করতে চাইছে।কিন্তু মুখে ওর কোনো এক্সপ্রেশন ফুটিয়ে না তুলেই চুপ করে মীরার কথাগুলো শুনতে লাগলো।
,
রাজবীরকে চুপ থাকতে দেখে মীরা কিছুটা মরিয়া হয়েই বললো,,,,,,,,,,দেখুন মিস্টার,,,,,,
,
কল মি রাজবীর,,,,,,,,গম্ভীর গলার আওয়াজ পেতেই চমকে মীরা রাজবীরের দিকে চাইলো।
,
আমাকে আমার নাম ধরেই ডাকতে পারো।আমার তাতে আপত্তি নেই মীরা।
,
কিন্তু আমার আছে।আমি আপনাকে চিনি না। আর না আপনি আমাকে চেনেন। আপনি না আমার বন্ধু হন আর না বয়ফ্রে,,,,, পুরো কথাটা আর বলেনা মীরা।
উমম যাইহোক মিস্টার রাজবীর,,,,,আপনি চিন্তা করবেননা,,কালকে যা কিছু হয়েছে তার জন্য যদি আমি প্রে,,,,,গনেন্ট হয়েও যাই তাতে আপনার কোনো দায় থাকবেনা।ইভেন আমি সেই পরিস্থিতি তৈরী হওয়ার আগেই ওষুধ খেয়ে নেবো।আপনি নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন।
,
অনেক্ষন ধরে মীরার সব কথা শুনলেও লাস্টের কথাটা শুনে রাজবীরের চোখ দপ করে জ্বলে উঠলো। দাঁতে দাঁত চেপে একপা একপা মীরার দিকে এগোতে থাকলো রাজবীর।
,
রাজবীরকে রেগে ঐভাবে ওর দিকে আসতে দেখে মীরাও পিছিয়ে গেলো কয়েক পা।কিন্তু আর এগোবার পথ নেই মীরার।দেওয়ালের সাথে সেটে আছে ও।
রাজবীর আস্তে আস্তে ওর মুখের সামনে নিজের মুখ নামিয়ে কোল্ড হাস্কি গম্ভীর স্বরে বললো,,,,,,,,,,রাজবীর সিংঘানিয়া আজ পর্যন্ত নিজের কাজের দায় কারোর ওপর চাপিয়ে দেয়নি।সেখানে কালকের ব্যাপারটা তো ছিলো আমার নিজস্ব পছন্দের।তাহলে যেটা আমি নিজেই ইচ্ছাকৃত করেছি তার দায় তুমি কেন নেবে।আর রইলো বাকি তোমার প্রেগনেন্ট হওয়ার,,,,তাহলে সেটাও হবে কিন্তু আমার ইচ্ছেতে।ভয় নেই আমি প্রটেকশন ইউজ করেছিলাম।তাই তোমাকে কোনো মেডিসিন নিতে হবেনা। বাট তুমি ডক্টরকে অবশ্যই দেখাবে টাও সেটা আমার পার্সোনাল ডক্টর।
,
জ্ঞানত রাজবীর মীরার এতটা কাছ থেকে কথা বলছিলো যে ওর প্রত্যেকটা নিঃশ্বাস মীরা নিজের মুখে ওপর ফিল করতে পারছিলো।তার ওপর রাজবীরের শরীর থেকে ভেসে আসা মেনস পারফিউমের জন্যই হোক বা ওর এই,নীল চোখ আর ওর গলার ভয়েস,,,সবটাই মীরাকে আছন্ন করে তুলছিলো। লজ্জায় ওর কান ও গাল লাল হয়ে গেছিলো। কিন্তু রাজবীরের লাস্টের কথাটা শুনে ও রেগে যায়।ফলে ও রাজবীরকে নিজের সামনে থেকে এক ঝটকায় দূরে করে ওর দিকে আঙ্গুল তুলে বলে,,,,,,,,,,,এক্সকিউজমি মিস্টার রাজবীর সিং,,, হোয়াট এভার,,,, আপনি নিজেকে কি মনে করেন কোনো দেশের প্রেসিডেন্ট যে আপনি যা হুকুম দেবেন সবাই সব মুখ বুজে মেনে নেবে। এই যে শুনুন আপনি হতে পারেন অনেক বড়োলোক তবে এই মীরা কারোর গোলাম নয়। আমি আমার নিজের মর্জির মালিক। যা ইচ্ছে হবে তাই করবো।আমি আপনার কোনো কথা শুনবোনা আর না কোনো ডক্টরের কাছ,,,,,,,,,,বলতে বলতেই মীরার মাথাটা ঘুরতে লাগলো।ও পরেই যেতো কিন্তু রাজবীর ওকে ধরে নেয়। আর বেডে নিয়ে গিয়ে বসিয়ে দেয়।
,
শক্ত করে ওর কোমরে হাত দিয়ে রেগে গিয়ে বলে,,,,,,,এক্সাক্টলি এটার জন্যই আমি বলেছিলাম ডক্টরের কাছে যেতে।কিন্তু তুমি তো কোনো কথাই শুনবেনা আমার । না কালকে শুনেছিলে আর না আজকে।
মাথায় হাত দিয়েই ঠোঁট ফুলিয়ে তাকায় মীরা রাজবীরের দিকে।
একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে রাজবীর মীরাকে বললো,,,,,,,,, সবসময় নিজের মর্জি চলেনা মিস মীরা।কালকে যে কারণে তুমি ওই বারে গিয়েছিলে সেটা কি আদেও ঠিক ছিলো যাওয়ার।যদিও বা গেলে তারপর কি করলে না এক্সকে ভোলার জন্য একটার পর এক ড্রিংক করতে লাগলে।আরে ড্রিংক করছো ঠিক আছে কিন্তু কে তোমাকে ড্রিংক দিচ্ছে বা তুমি কার সাথে আছো সেটা খেয়াল করবেনা।কালকে যদি আমার বদলে অন্য কেউ থাকতো তাহলে,,,,,,,,,,,
,
তাহলে কি মিস্টার রাজবীর কি করতো,,,,,,আপনার মতোই সেও তো এই শরীরটা ভোগ করতো।যেটা আপনিও করেছিলেন কালকে আমার সাথে। আপনার আর তার সাথে তো কোনো তফাৎ নেই মিস্টার রাজবীর।আসলে কি জানেন তো আপনি , আমার এক্স আর যার কথা আপনি বলছেন সব ,,,সব কটাই এক।সবাই শুধু এই শরীরটাকেই বোঝে।মন আর কজন বোঝে। একটা তাছিল্য হাসি হেসে মীরা বলে,,,,,,,,,আপনি যদি ভেবে থাকেন আমার সাথে ইন্টিমেন্ট হয়েছেন বলে আমার ওপর আপনার অধিকার এসে গেছে তবে আপনি ভুল মিস্টার রাজবীর।কারণ এই মীরা তাকেই সব অধিকার দেয় যাকে সে তার এই যে মন ,,, এই মনে জায়গা দেয়। তাই প্লিজ সরুন আমাকে যেতে দিন।আমার জন্য আমার মা অপেক্ষা করছে।
,
রাজবীরকে পাশ কাটিয়ে মীরা আস্তে করে এগোতে গেলে রাজবীরের গলার আওয়াজে থেমে যায় ওর পা।
,
চার্লি 485,,,,,aphrodisiac একটা হাই ডোজের ড্রাগ । যেটা ড্রিংকের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলে প্রথমে কিছুই অনুভব হবেনা।তবে ধীরে ধীরে গলা শুকিয়ে আসবে ফলে মানুষটা জলের অভাবে ছটফট করবে।তারপর মনে হবে পেটে কিছু সুড়সুড়ি মতন লাগছে, তারপর ধীরে ধীরে শরীরে তাপমাত্র বৃদ্ধি পাবে।একসময় মনে হবে শরীরের সব পোশাক খুলে ফেলে দিতে। তারপর সেই তাপ থেকে নিজেকে মুক্ত করতে আরেকটা শরীরকে প্রয়োজন পড়বে নিজের জৈবিক চাহিদাগুলো মেটানোর জন্য। আর সব থেকে বড়ো কথা হলো এর কোনো এন্টিডট আবিষ্কার হয়নি।
,
থর থর করে কেঁপে উঠলো মীরা রাজবীরের কথা শুনে। কালকে কে ওর এমন সর্বনাশ করলো? আর কেন করলো? ওর তো কোনো শত্রু নেই,,তাহলে।
,
মীরার মনে চলতে থাকা প্রশ্নের আচ রাজবীর বুঝতে পারলো।তাই ও এগিয়ে এসে ওর হাত ধরে সোফায় বসালো।তারপর রাজবীর নিজে বসলো ওর পায়ের কাছে।
কালকে আমিও ও ক্লাবে ছিলাম মীরা।আমার একটা মিটিং ছিলো ওখানে। আর যে ড্রিংকটা তুমি করেছিলে সেটা তোমার জন্য ছিলই না। ছিলো আমার জন্য।
,
কিহ,,,,,,,,,,বড়ো বড়ো অবাক করা চোখ মেলে মীরা তাকালো রাজবীরের দিকে।
,
ডার্মাটোগ্রাফিয়া,,,,,,,,এই অবিশ্বাস্যভাবে বিরল ,মেয়েদের স্পর্শে অ্যালার্জি করে, । যখন তাদের খালি ত্বকে স্পর্শ করা হয়, এটি সরাসরি যোগাযোগের জায়গাগুলির সাথে লালভাব এবং উত্থিত ত্বকের কারণ হয়।
,
মীরার মাথা ঘুরতে থাকে রাজবীরের কথা শুনে। এ কেমন অ্যালার্জি যা মেয়েরা ছুলে হয়।কই আমিও তো কালকে এই মানুষটাকে ছুঁয়েছি,ইভেন এখনো আমার হাত ধরে বসে আছে,কই কিছু তো হচ্ছে না।তাহলে।
,
না,,,,তোমার ছোঁয়ায় আমার কোনো অ্যালার্জি হচ্ছেনা।বরং আমি একমাত্র তোমার সাথেই কমফোর্টেবেল ফিল করছি। তুমি কি বিশ্বাস করবে আমার কথা?
,
হা করে দেখলো মীরা রাজবীরকে।
,
দেখো আমার বিজনেসের জন্য আমার যেমন বন্ধু আছে ,তেমনি শত্রুও কম নেই।আর আমার শরীরের এই একটাই দুর্বল অংশ।যেটাকে খুব সহজেই কাজে লাগিয়ে আমার শত্রুরা আমাকে মেরে পর্যন্ত ফেলতে পারে। আর কালকে এটাই করতে চেয়েছিল।কিন্তু তুমি মাঝখানে এসে সব বিগড়ে দাও।
থ্যাংকস আমাকে বাঁচানোর জন্য। তুমি যা চাইবে আমি তাই দেব তোমাকে।
,
না আপনি পারবেননা আমাকে দিতে আমি যেটা চাইবো।
,
তুমি একবার বলেই দেখোনা কি চাও তুমি।গাড়ি,বাড়ি,লাক্সারিয়াস কার,শপিংমল যেটা বলবে সেটাই দেব।ট্রাস্ট মি এই রাজবীর নিজের কথা রাখতে জানে।
,
ভারজিনিটি,,,,,,,,,,,,,,,,,, দিতে পারবেন ফিরিয়ে যেটা আপনি কালকে আমার অজ্ঞানে নিয়ে নিয়েছিলেন।
,
রাজবীরের মনে হলো ওর গালে কেউ সপাটে থাপ্পড় মারলো টেনে। চুপ করে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো মীরার দিকে।
,
একটা ম্লান হাসি ফুটে উঠলো মীরার ঠোঁটের কোনে। আমি জানতাম পারবেননা। কারণ এটা আপনি নিজেই করেছেন তাও নিজের মর্জিতে।তাই এটা ফিরত দেবার ক্ষমতা আপনার কাছে নেই।
,
এক মিনিট,,,,,,,রাজবীর মীরার সামনে থেকে উঠে দাঁড়িয়ে গায়ের কোর্টটা প্রথমে খুলে রাখলো পাশে।
রাজবীরের এমন কাজে অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখলো মীরা।
তারপর আস্তে আস্তে এক এক করে জামার বোতামটা খুলতে গিয়েই মীরার আওয়াজে হাত থামলো রাজবীরের।
কি,,কি করছেন মিস্টার রাজবীর।শার্ট খুলছেন কেন।
,
কারণ এখানেই তোমার প্রশ্নের জবাব আছে মিস মীরা।
একটানে নিজের শরীর থেকে শার্টটা খুলে পিছন ফিরে দাঁড়ালো রাজবীর।
,
শিউরে উঠলো মীরা।রাজবীরের গোটা পিঠটাতে নখের আঁচড় ও কামড়ানোর দাগে ভর্তি হয়ে গেছে। এটা যে কালকে ওরই কীর্তি সেটা আলাদা করে বোঝাতে হবেনা। দুহাত দিয়ে নিজের মুখ চেপে ধরলো মীরা।
,
সামনে ফিরে মীরাকে দেখে রাজবীর হেসে বললো,,,,,কালকে শুধু তোমারই নয় আমিও আমার ভারজিনিটি হারিয়েছি মিস মীরা।
জানি আমার কথাটা শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এটাই সত্যি।আমার যে রোগটা আছে তার জন্য শুধু আমার মা,দিদি ছাড়া অন্য কোনো মেয়েদের সংস্পর্শে আসলে আমার সারা শরীরে ৱ্যাস বেরিয়ে যায়।তখন আমার শ্বাসকষ্ট এমনকি আমি জ্ঞান পর্যন্ত হারিয়ে ফেলি।ফলে এই 29 বছর বয়স অবধি আমি সিঙ্গেল ও স্টিল ভার্জিন। তাহলে এবার বলো আমি ও কি ফিরে পাবো আমার ভারজিনিটি।
,
মিস্টার রাজবীর আমিও মেয়ে আর আমিও তো আপনাকে টাচ করেছি,কিন্তু আপনার তো কিছুই হয়নি।
,
এক্সাক্টলি ঠিক এই জন্যই আমি চাই তুমি আমার পার্সোনাল ডক্টরের কাছে যাও।ওখানে ও তোমাকে দেখে তোমার ব্লাড স্যাম্পেল কালেক্ট করে দেখবে যদি আমার ব্লাড সেলের সাথে ম্যাচ খেয়ে যায় তবে ,,,,,,,,
,
তবে কি।
,
তবে আমি তোমাকে বিয়ে করবো মিস মীরা।
,
হোয়াটটটটটটটটটটটট,,,,,,,,,,,বিয়ে!!!
,
হম্ম এতে অবাক হওয়ার কি আছে। আমি একজন সাকসেসফুল বিজনেস ম্যান,হ্যান্ডসাম একজন ছেলে তোমাকে বিয়ের প্রপোসাল দিচ্ছি সেখানে অবাক হওয়ার তো কিছুই নেই।বরং তোমার গর্ব করা উচিত , তাই নয় কি।যেখানে আমাকে বিয়ে করার জন্য মেয়েদের লাইন লেগে আছে।
,
ওহ প্লিজ মিস্টার রাজবীর,,,,,,,,,, প্রথমত,,, না আপনি আমাকে চেনেন আর না আমি আপনাকে। মিনিমাম বন্ধুত্ব অবধি নেই, বিয়ে করা তো দূরের কথা।দ্বিতীয়ত,,,,,আপনি যতই বড়োলোক বা হ্যান্ডসাম হোননা কেন আমি ইন্টারেস্টই নই আপনার ব্যাপারে।আর তৃতীয়ত আপনাকে কে বা করা বিয়ে করার জন্য লাইনে পরে আছে জানিনা ,,তবে আমাকে আপনি ওই লাইনে পাবেননা।কারণ আমি ওইরকম মেয়েদের তালিকায় পরিনা।
আমার কাছে বিয়ে হলো এমন এক বন্ধন যেটাকে দেখা যায়না কিন্তু অনুভব করা যায়।যেটা সময়ের সাথে সাথে মজবুত এক অটুট বন্ধনে পরিণত হয়।আর এই বন্ধনকে অটুট রাখতে যে যে জিনিসের দরকার হয় সেটা হলো ভালোবাসা, বিশ্বাস,সম্মান ও ভরসা। আমাদের ক্ষেত্রে এগুলির কোনোটাই নেই।
যেটা রয়েছে সেটা হলো স্পর্শ।আমার স্পর্শে আপনার শরীরে ক্ষতি হয়না।শুধুমাত্র এর জন্য আমাকে আপনি বিয়ে করবেন সেটাতো হয়না মিস্টার রাজবীর।
আমি খুব সাধারণ পরিবারের খুব সাধারণ একজন মেয়ে।তাই আমার চাহিদাটাও খুবই সাধারণ।আমি আর আপনি পৃথিবীর দুই প্রান্তের দুই মেরুর মানুষ।আমাদের মনের মিল কখনোই হবেনা।তাই বৃথা চেষ্টা করে লাভ নেই।
,
এটাই কি একমাত্র রিজেন আমাকে রিজেক্ট করার,,,,,,,রাগে খুব শান্ত স্বরে বললো রাজবীর।ও সত্যিই আজকে অবাকের চরম সীমায় আছে।যেখানে ওর একটা কথাতে গোটা দেশের রাজনীতি থেকে অর্থনীতি সবকিছুই চোখের পলকে বদলে যায়,সেখানে ওর সামনে দাঁড়িয়ে এই পুচকি মেয়েটা কি অবলীলায় ওর দেওয়া বিয়ের প্রস্তাব বাতিল করে দিচ্ছে।
নাহ,,,,মেয়েটা সাধারণ হয়েও ওর মধ্যে অসাধারণ কিছু আছে ।নাহলে কারোর সাহস নেই এইভাবে আমার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলবে।
,
কি হলো মিস মীরা বলুন আমাকে রিজেক্ট করার কি এটাই রিজেন নাকি এখনো নিজের এক্স বয়ফ্রেন্ড কে ভুলতে পারছোনা।নাকি ওর জন্য অপেক্ষা করছো যদি ফিরে আসে আবার তোমার কাছে।
,
মাইন্ড ইওর ল্যাংগুয়েজ মিস্টার রাজবীর। আমি আমার ব্যক্তিগত জীবনে কি করবো আর কি করবোনা সেটা আপনাকে জানাতে আমি বাধ্য নই। আর হ্যাঁ আমি ছেড়েছি সাহিলকে সে আমার সাথে ব্রেকাপ করেনি। আর আমার একটা নীতি আছে যে জিনিসটাকে আমি আমার মন থেকে বাদ দিয়ে দি সেটা মরে গেলেও আর নিজের জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে আসিনা।সেটা কোনো জিনিস হোক বা মানুষ। আমার মনে হয় আমাদের আর কোনো কথা নেই।আমি আসছি।
মীরা উঠে গিয়ে নিজের জামা প্যান্ট নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকতে যাবে তার আগেই রাজবীর বললো,,,,, ঐদিকে ক্লোসেটে তোমার জন্য নতুন জামা রাখা আছে সেগুলো পরে নাও।
,
নো থ্যাংক ইউ,,,,আমি আমার এই জামাতেই কমফোর্টেবেল। আর তাছাড়া বেশি দামি জিনিস আমার আবার সহ্য হয়না।বলেই শব্দ করে ওয়াশরুমে ঢুকে যায় মীরা।
,
উফফফফ ড্যাম ইট,,,,,,,,এই মেয়ে কি দিয়ে তৈরী কে জানে। আমার কথা না শোনার প্রতিজ্ঞা করেছে যেন।যতই ভালো ভাবে বোঝাই কিছুতেই বুঝতে চাইছেনা। ওকে কুল ডাউন রাজ,,,, এই মেয়েও অন্যান্য মেয়েদের মতো নয়। একে নিজের রাজপ্রাসাদে বন্দি করতে তোকে অন্য উপায় ভাবতে হবে। একে টাকা দিয়ে কেনা যাবেনা।
মিস মীরা,,,,,, একবার যখন তুমি এই রাজবীরের নজরে বন্দি হয়ে গেছো, তখন তোমাকে সারাজীবনের জন্য এই রাজবীরের বন্দিনী হয়েই থাকতে হবে।এর কোনো অন্য উপায় নেই আর থাকলেও সেটাকে কি করে সরিয়ে দিতে হয় সেটা এই রাজবীর সিংঘানিয়া খুব ভালো করে জানে,,,,,,,জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ।
,
_______চলবে।
Thanks for your feedback